জেলা প্রশাসকের আল্টিমেটামে ফিরলো লুট হওয়া ২৫ লাখ ঘনফুট সাদাপাথর

চলছে পুনঃস্থাপনের কাজ, ১২ লাখ ঘনফুট ডাম্পিং স্ট্যান্ডে

রোববার এক দিনেই পাথর ফিরে এসেছে ৮৫ হাজার ঘনফুট। প্রাপ্ত পাথর দিনে-রাতে সাদাপাথরে পুনঃস্থাপনের কাজ চলছে। রোববার পুনঃস্থাপন করা হয়েছে সাড়ে চার হাজার ঘনফুট পাথর।

আবদুল কাদের তাপাদার, সিলেট ব্যুরো

Location :

Sylhet
লুট হওয়া পাথর ফিরছে পর্যটন এলাকায়
লুট হওয়া পাথর ফিরছে পর্যটন এলাকায় |নয়া দিগন্ত

সিলেটের জেলা প্রশাসকের আল্টিমেটামের পর নিজ উদ্যোগে ট্রাকের পর ট্রাক ভর্তি করে সাদাপাথর ফিরিয়ে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। রোববার (২৪ আগস্ট) রাত পর্যন্ত সর্বশেষ ২৫ লাখ ঘনফুট পাথর জব্দ করেছে প্রশাসন। এর মধ্যে ডাম্পিং স্ট্যান্ডে ১২ লাখ ঘনফুট পাথর জমা হয়েছে।

রোববার এক দিনেই পাথর ফিরে এসেছে ৮৫ হাজার ঘনফুট। প্রাপ্ত পাথর দিনে-রাতে সাদাপাথরে পুনঃস্থাপনের কাজ চলছে। রোববার পুনঃস্থাপন করা হয়েছে সাড়ে চার হাজার ঘনফুট পাথর।

সিলেট জেলা প্রশাসন ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানিয়েছে, অনেকেই পাথর ফেরত দিতে উপজেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের সাথে যোগাযোগও করছেন।

শনিবার (২৩ আগস্ট) রাত থেকে রোববার রাত পর্যন্ত পাথর ব্যবসায়ীরা নিজ খরচে অন্তত ১২০ ট্রাক পাথর সাদাপাথর এলাকায় পৌঁছে দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

কোম্পানিগঞ্জ ও সিলেট সদর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পাথর ফিরিয়ে দিতে প্রশাসনের মাইকিংয়ের পর অনেক ব্যবসায়ী পাথর ফেরত দেয়ার জন্য যোগাযোগ করেছেন। শনিবার দিবাগত রাত থেকে রোববার ভোর ৬টা পর্যন্ত ২৫১টি ট্রাকে তল্লাশি চালানো হয় এবং সাতটি বাদে সবকটি ট্রাকে এলসি পাথর থাকায় ছেড়ে দেয়া হয়।

রোববার দুপুর ১টায় সদর উপজেলার লালবাগের ঝুমুর ক্রাশার ও শাহজালাল ক্রাশার মেশিনে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় ঝুমুর ক্রাশারে প্রায় ১০ হাজার ঘনফুট এবং শাহজালাল ক্রাশার মেশিনে প্রায় ৫০ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয় এবং স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্যের জিম্মায় দেয়া হয়।

শনিবার রাত থেকে রোববার বিকেল পর্যন্ত ১০০’র বেশি ট্রাক দিয়ে পাথর ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর এলাকায় পাঠানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলার ধোপাগুল এলাকার স্টোন ক্রাশার মিল ব্যবসায়ী কাজী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আমি তিন মাস আগে পাথর কিনেছিলাম। এরপর আর কোনো পাথর কিনিনি। তবু জেলা প্রশাসক যেহেতু বলেছেন তার প্রতি সম্মান রেখে আমার মিলে থাকা সব পাথর সাদাপাথরে ফিরিয়ে দিয়েছি।’

এদিকে, ব্যবসায়ীরা ফেরত দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার হওয়া পাথর সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে প্রতিস্থাপনের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

এ ব্যাপারে ইউএনও খুশনূর রুবাইয়াত গণমাধ্যমকে জানান, ‘শনিবার রাত ১২টা থেকে রোববার বিকেল পর্যন্ত ১০০’র বেশি ট্রাক পাথর সাদাপাথর এলাকায় পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এছাড়া সিলেটের ধোপাগুল এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ী নিজ উদ্যোগে তাদের সংগ্রহে থাকা পাথর আটটি ট্রাকে সাদাপাথর স্পটে পোঁছে দিয়েছেন। পাথর ফিরিয়ে দেয়ার গণবিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর অনেকেই আমাদের সাথে যোগাযোগ করছেন পাথর ফেরত দেয়ার জন্য। তবে তারা বলছেন, পর্যাপ্ত পরিমাণ ট্রাক না থাকার কারণে তারা পাথর পরিবহন করতে পারছেন না। বিষয়টি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তদারকি করছেন।’

এর আগে শনিবার সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ থেকে লুট হওয়া সাদা পাথর আগামী মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যে নিজ উদ্যোগে, নিজ খরচে পৌঁছে দেয়ার নির্দেশ দেয় জেলা প্রশাসন। এ সময়ের পর কারো কাছে সাদা পাথর পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়। এ ব্যাপারে একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে জেলা প্রশাসন। একইসাথে কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলায় মাইকিং করা হয়।