বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে সচিবায়লসহ সকল প্রতিষ্ঠান কেবলমাত্র আল্লাহর আইন দ্বারা পরিচালিত হবে। দেশে ইসলামবিরোধী কোনো আইন চলবে না।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ময়মনসিংহ নগরের ঐতিহাসিক সার্কিট হাউস মাঠে নির্বাচনের আগে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি, জুলাই গণহত্যায় অভিযুক্তদের দ্রুত বিচার কার্যকর এবং নির্বাচনের আগে গণভোটসহ ৫ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে ৮ দলের বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি একথা বলেন।
বাংলাদেশের সকল দল ইসলামের পতাকাদলে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে মজিবুর রহমান বলেন, ২০১৪, ১৮ এবং ২৪ স্টাইলের মতো নিবার্চন আমরা চাই না। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টাকে আমাদের পাঁচ দফা দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমাদের ৮ দল ইসলামী আইনের পক্ষে। এই ৮ দলকে দেশের ৯০ ভাগ মুসলমানের দলে পরিণত করতে চাই। বাংলাদেশের সব ইসলামী দল ইসলামের পতাকার নিচে সমবেত হবে ইনশাল্লাহ। আমরা দরজা উন্মুক্ত করে দিয়েছি। বিএনপিকেও বলছি আপনারাও আসুন, আল্লাহকে এক বলে মানুন। কিন্তু দুঃখ হয় যখন তারা বলে, তারা শরীয়তের আইনে বিশ্বাস করে না। কথাটা তারা জেনে বলছে, নাকি না জেনে বলছে- এটা এখনো আমার কাছে পরিষ্কার নয়।
সমাবেশে তিনি আরো বলেন, ৫৪ বছর আমরা শান্তি পাইনি। আমরা দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাই। মানুষ যখন আল্লাহর আইনের সম্পূর্ণ আনুগত্য করবে, তখনই শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে। কোরআন ও সুন্নাহর আইন বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করতে ৮ দল ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এ জন্য যদি জিহাদ করতে হয়, জীবন দিতে হয়- আপনারা কি প্রস্তুত? সামনে প্রয়োজন হবে।
তিনি দেশের প্রথম স্বাধীনতা-সংগ্রাম ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, ১৯৭১ সালের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল অত্যন্ত ভালো। কিন্তু দুর্ভাগ্য, যারা নেতৃত্ব দিয়েছিল, তারা সেই উদ্দেশ্য সফল করতে পারেনি। ফলে প্রথম স্বাধীনতা ব্যর্থতায় পরিণত হয়েছে। দ্বিতীয় স্বাধীনতায় আবু সাঈদ-মুগ্ধ জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেছে যে প্রথম স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়েছে। তারা জীবন দিয়ে দ্বিতীয় স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে। সামনে আদর্শিক লড়াই হবে- এ দেশে মানুষের তৈরি মতবাদ, জাতীয়তাবাদ চলবে না। কোরআন-সুন্নাহর আইন চালু হবে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসেই তার পরীক্ষা হয়ে যাবে, ইনশাল্লাহ।
আজ সকাল থেকেই বিভিন্ন জেলার উপজেলা, মহল্লা ও গ্রামাঞ্চল থেকে মিছিল এসে জমায়েত হয় সার্কিট হাউজ মাঠে। পুরো এলাকা পরিণত হয় স্লোগান, তাকবির ও ইসলামী চেতনার এক উৎসবে।
সমাবেশকে ঘিরে পুরো মাঠ এবং আশপাশের এলাকাজুড়ে ছিল বাড়তি পুলিশ মোতায়েন। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্রাফিক বিভাগ বিশেষ রুট ম্যাপও প্রস্তুত করে। তবে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
সমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন্দের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা হেদায়েত উল্লাহ হাদী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউসুফ সাদেক হক্কানী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মূসা বিন ইজহার প্রমুখ।



