হাওরাঞ্চলের প্রবেশদ্বার নিকলী-বাজিতপুরসহ আশেপাশের সকল হাওরের উপজেলাতেই মৌসুমী আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ধরণের ফসলের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন ভালো বলেই স্থানীয় চাষিরা তুলনামূলক লাভবান বলে উল্লেখ করেছেন। তবে বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে শাকসবজির সরবরাহ দেখে দামের ক্ষেত্রে অসন্তোষ প্রকাশ করে চলেছেন নিম্ন আয়ের লোকেরা। অষ্টগ্রাম উপজেলার অধীনস্থ মধ্যে অষ্টগ্রামের জমাদার পাড়ার অটোরিকশা চালক রফিকুল ইসলামকে সবজি বাজারে গিয়ে বলতে শোনা গেছে বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে সবজি রয়েছে অথচ দাম তুলনামূলক অনেক বেশি। গোল আলু ব্যতিত প্রায় সকল ধরণের সবজির দাম বেশি বলেও তিনি উল্লেখ করেন। একই এলাকার কৃষির সাথে জড়িত নিম্ন আয়ের শুকেনকে হাট থেকে আসার সময়ে বলতে শোনা যাচ্ছে শাকসবজি বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকলেও কম দামে মিলেনি কোনো ধরণের সবজির দাম।
এছাড়াও জেলার সর্ববৃহৎ কাঁচামালের আড়ত পিরিজপুরে গিয়ে দেখা মিলে বিভিন্ন ধরণের পাইকারদের। সেখানে প্রচুর পরিমাণে কাঁচামাল রয়েছে। তবে দাম সেখানেও তুলনামূলক অনেক বেশি। সেখানকার পাইকারদেরকে হতাশার সুরে বলতে শোনা গেছে, চড়া দামে কিনে নিয়ে স্থানীয় হাট বাজারে বিক্রি করতে গিয়ে তাদেরকে অনেক দরকষাকষি করতে হচ্ছে। সেখানকার পাইকারি বাজারে নিকলীর ফাইজুল নামের এক পাইকারকে শাকসবজির বিষয়ে জিজ্ঞেস করতেই বলতে লাগলেন, এই এলাকায় প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজির ফলন হয়েছে। বাজারেও রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। তবুও দাম বেশি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
নিকলী উপজেলার রোদারপুড্ডা বাজারে ধনু নামের একজনকে খুচরা লাউ সবজি বিক্রি করতে দেখা গেছে খোলা জায়গায় বসে। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় এই বছর সবজি আবাদে কি অবস্থা? জবাবে তিনি এই বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন পেয়েছেন বলে জানান। পাশাপাশি তিনি সবজি বিক্রি করে অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি লাভবান হয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন।
নিকলী উপজেলা সদরের ব্যবসায়ী আল-আমিন জানান, এই বছর তুলনামূলক বৃষ্টির পরিমাণ কম থাকায় আর পানির পরিমাণটাও হাওরের উজান এলাকায় কম আসায় সেখানকার সবজির ফলন খুব ভালো হয়েছে। তবে ফলন ভালো হলেও দামের পরিমাণ অনেকখানি বেশি বলে জানান।
সরেজমিনে হাওরাঞ্চালের বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা গেছে নিম্ন আয়ের লোকেরা হিমশিম খাচ্ছে শাক সবজির দাম নিয়ে।
শীতকালীন সবজির মধ্যে দেখা গেছে বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি, কাচা মরিচ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি, টমেটো ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি, শিম ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি, কড়লা ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। ছোট সাইজের কুমড়াও লাউয়ের দাম সর্বনিম্ন ৫০ টাকা আর বড় সাইজের ১০০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত। তবে স্বস্তি শুধু গোল আলুর বেলায়। গোল আলু প্রতি কেজি ২০ থেকে ৩৫ টাকায়। শুধু শাকসবজির দামের ক্ষেত্রে নয় অনেককেই বলতে শোনা যাচ্ছে মাছের দেশেই মাছের দাম তুলনামূলক অনেক বেশি। সেখানকার হাট-বাজারে মাছের দামও সবজির ন্যায় অনেকখানি বেশি। সচেতন মহলের অনেকেই ধারণা করে চলেছেন বাজারে তদারকির পরিমাণটা তুলনামূলক কমে গেছে। এই কারণেই হয়তো অনেকখানি এমন তারতম্য হয়ে থাকতে পারে।



