মাদরাসা জঙ্গিবাদের স্থান নয় : সাটুরিয়া থানার ওসি

‘সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থা থেকেও ভালো শিক্ষা পাওয়া যায়, কিন্তু দ্বীনি বিষয়ে আমাদের সবাইকে আলেমদের কাছেই যেতে হয়।’

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) সংবাদদাতা

Location :

Saturia
অনুষ্ঠানে ওসি এ.আর.এম আল মামুন
অনুষ্ঠানে ওসি এ.আর.এম আল মামুন |ছবি : নয়া দিগন্ত

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ.আর.এম আল মামুন বলেছেন, বিগত সরকারের সময়ে অনেক ওলামায়ে কেরাম অন্যায়ভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন। পরে দেখা গেছে—অভিযোগগুলোর কোনো সত্যতা ছিল না। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান যেখানে ইসলামের খেদমতে নিয়োজিত, সেখানে কেউ জঙ্গি হয় না। তারপরও খোঁজখবর রাখা পুলিশের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।

রোববার (২৩ নভেম্বর) উপজেলার বাছট বৈলতলা মোকদমপাড়া হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানা পরিচালিত শহীদ স্মৃতি প্রি-ক্যাডেট মাদরাসার তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে তিনি এ কথা বলেন।

ওসি আরো বলেন, মাদরাসা কিভাবে চলছে, এখানে সুবিধা–অসুবিধা কী—এসব বিষয়ে হুজুরদের ও পরিচালনা পরিষদের সাথে যোগাযোগ রাখা আমাদের দায়িত্ব। ইসলামের শিক্ষা ও মানবিক মূল্যবোধ যদি মানুষ অর্জন করে, তাহলে অপরাধপ্রবণতা কমে যায়। অপরাধ, মামলা, হামলা, চুরি, ডাকাতি, মাদক—এসব কিছুর মূলে রয়েছে ইসলামী শিক্ষার অভাব।

সাম্প্রতিক ভয়াবহ ভূমিকম্পের প্রসঙ্গ তুলে ওসি আল মামুন বলেন, আমরা দ্বীনি শিক্ষা কোথায় পাবো? মাদরাসা হচ্ছে দ্বীনি শিক্ষার কারিগর। এখান থেকে যে শিশুরা বের হবে, তারা সমাজকে সঠিক পথে দিকনির্দেশনা দেবে।

ওসি আল মামুন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, সবসময় হুজুরদের থেকে শিখবে। ইসলামের দায়ভার আলেম সমাজের ওপর। সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থা থেকেও ভালো শিক্ষা পাওয়া যায়, কিন্তু দ্বীনি বিষয়ে আমাদের সবাইকে আলেমদের কাছেই যেতে হয়।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন শহীদ স্মৃতি প্রি-ক্যাডেট মাদরাসার অবৈতনিক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) আন্তর্জাতিক সম্পাদক হাবিবুল্লাহ মিজান। স্বাগত বক্তব্য দেন পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান পিন্টু। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মাদরাসার মোহতামিম হাফেজ কারী আব্দুর রহমান।

এ ছাড়া মাদরাসার সহকারী শিক্ষক হাফেজ আমির হামজা সিয়াম, মুফতী আলমগীর হুসাইন, সহকারী শিক্ষিকা তাসলিমা আক্তার, পারভীন আক্তার, তাসলিমা বেগম, লায়লা আক্তার, দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

প্লে, নার্সারি, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণী—মোট পাঁচ বছর সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি আরবি ভাষা ও প্রাথমিক দ্বীনি শিক্ষায় পাঠ সম্পন্ন করার পর শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে অবস্থিত আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম পরিচালিত নূরানী তা’লীমুল কোরআন বোর্ডের অধীনে বোর্ড পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরবর্তীকালে নারী শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে এবং পুরুষ শিক্ষার্থীরা এই প্রতিষ্ঠানের হেফজ বিভাগে আবাসিক শিক্ষার্থী হিসেবে ভর্তি হয়।

গত বছর উত্তীর্ণের হার ছিল শতভাগ। মোট আটজন পরীক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে উপজেলায় প্রথম স্থান অর্জন করে শহীদ স্মৃতি প্রি-ক্যাডেট মাদরাসা।