ফেনীতে স্বামীকে আটক করে স্ত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা

‘পালাক্রমে ধর্ষণ ও নির্যাতনের বিষয়ে ভুক্তভোগী নারী থানায় এজাহার জমা দিয়েছেন। ভিকটিমকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

শাহাদাত হোসাইন, ফেনী অফিস

Location :

Feni Sadar
ফেনীতে স্বামীকে আটক করে স্ত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা
ফেনীতে স্বামীকে আটক করে স্ত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা |নয়া দিগন্ত

ফেনীতে নুরুল করিম বাবলু নামে এক ভ্যান চালককে আটক করে তার স্ত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে যুবদল কর্মীদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ফেনী শহরতলীর মাথিয়ারা গ্রামে সংগঠিত ওই ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুরের দিকে ফেনী মডেল থানায় ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ দেয়ার পর বিষয়টি জানাজানি হয়।

মামলায় আসামিদের মাঝে মাথিয়ারা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে কামরুল (৩৮), জয়নাল আবেদীনের ছেলে মহিম (৩৫) ও রকি (২২) নামের এক ব্যক্তির নাম রয়েছে।

এদিকে মামলার প্রধান আসামি কামরুল ইসলাম নিজেকে যুবদলকর্মী দাবি করে পুরো ঘটনাটি রাজনৈতিকভাবে সাজানো মিথ্যাচার বলে দাবি করেছেন।

মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী জানায়, ‘প্রায় ৬ মাস আগে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলা থেকে ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের মাথিয়ারা এলাকায় এসে আনোয়ার মিয়ার কলোনির একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে থাকতেন ওই দম্পতি। স্বামী নুরুল করিম বাবলু রিকশা ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাতেন। কয়েক মাস আগে থেকে স্থানীয় বখাটেরা বাবলুর স্ত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন।’

‘মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৮টার দিকে স্থানীয় রকি কথা আছে বলে রিকশা চালক বাবলুকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে গভীর রাতে বাবলুর অবস্থা খারাপ বলে তার স্ত্রীকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে তারা কলোনীর পাশে একটি নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ে নিয়ে বাবলুর স্ত্রীর কাছে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে বাবলুকে মারধর করে মাদক দিয়ে পুলিশে দেয়ার ভয় দেখায়। এক পর্যায়ে কামরুল, মহিন ও রকি ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।’

নির্যাতিতার স্বামী বাবলু জানান, ‘রাতভর বখাটেরা আমাকে আটকে রেখে মারধর করে। সকালে তাদের থেকে ছাড়া পেয়ে বাসায় আসলে আমার স্ত্রীর সাথে যা হয়েছে জানতে পারি। আমি এর বিচার চাই।’

নির্যাতিতা নারী জানান, ‘আমি দুই সন্তানের জননী। তারা এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালী। তারা কয়েকমাস ধরেই আমাকে নানাভাবে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আমাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে আমার স্বামীকে অন্যত্র আটক করে ভয় দেখিয়ে আমাকে ধর্ষণ করেছে। আমি বখাটেদের বিচার চাই। আমি রাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তা চাই।’

এদিকে মামলার প্রধান আসামি কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি যুবদলের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছি। বিগত ১৫ বছর কমিটি গঠন না করায় কোনো পদবীতে নেই। আমাদের দলীয় প্রতিপক্ষের লোকজন আমাকে হেয় করতে এ ষড়যন্ত্র করেছে। ঘটনাস্থলের ভিডিওতে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি দেলু চেয়ারম্যানের ভাতিজা ও তার সহযোগিদের সিসি টিভিতে দেখা যাচ্ছে। তাদেরকে আসামি না দিয়ে ষড়যন্ত্র করে আমাকে আসামি করে হয়রানী করা হচ্ছে।’

ফেনী জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নঈম উল্লাহ চৌধুরী বরাত বলেন, ‘পাঁচগাছিয়ার মাথিয়ারায় কামরুল নামে যুবদলের কোনো কর্মী নেই। তারপরও বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব।’

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামছুজ্জামান জানান, ‘পালাক্রমে ধর্ষণ ও নির্যাতনের বিষয়ে ভুক্তভোগী নারী থানায় এজাহার জমা দিয়েছেন। ভিকটিমকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’