কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফরিদা বেগম (২৪) নামের এক গৃহবধূ মাকে ফোন করে শ্বশুরবাড়ি থেকে তাকে নিয়ে যাওয়ার আকুতি জানান। এদিনই শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ওই গৃহবধূর লাশ।
মঙ্গলবার এ তথ্য জানান ভুক্তভোগী নারীর মা শহিদা বেগম।
তিনি বলেন, “সকাল ৭টার দিকে মেয়ে ফোন করে জানিয়েছিল, ‘মা, আমাকে নিয়ে যান, ওরা আমাকে মেরে ফেলবে।’ এরপর জানতে পারি, ফরিদা আর নেই। আমি এ হত্যার বিচার চাই।”
নাঙ্গলকোট উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের কালাচৌ গ্রামের বড়িয়াপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।
গৃহবধূ ফরিদা জোড্ডা পূর্ব ইউনিয়নের পানকরা গ্রামের হেদায়েত উল্লাহর মেয়ে এবং তার স্বামী সারোয়ার আলম প্রায় ১০ বছর ধরে দুবাই প্রবাসী। তাদের দু’টি সন্তান রয়েছে।
ফরিদার মা শহিদা বেগম আরো বলেন, ‘সরোয়ার আলমের সাথে জায়গাজমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আমার মেয়ের দেবর মোশারফ হোসেন, ভাসুর মোস্তফা ও শাশুড়ি জমিলা বেগমের সাথে বিরোধ চলছিল। আমার মেয়ে ফরিদা তাদের হাতে প্রায় সময় মারধরের শিকার হতো।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফরিদাকে পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন এলোপাতাড়ি মারধর করে। পরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় একটি ওষুধের ফার্মেসিতে নিলে পল্লী চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে বাড়িতে নিয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অপপ্রচার চালায়।
ফরিদার সাত বছর বয়সী ছেলে ফয়সাল বলেন, ‘সকালে দাদু, জেঠা আর দাদি মাকে মারছিল। পরে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে আর মাকে দেখি না।’
এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বাড়িতে গিয়ে তাদেরকে না পাওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে ফজলুল হক বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছি। রিপোর্ট হাতে ফেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।