কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে সাদিয়া আক্তার (২২) নামে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহত সাদিয়া আক্তার বুড়িচং উপজেলার বাকশিমুল ইউনিয়নের উত্তর কোদালিয়া গ্রামের রেজাউল হোসেনের মেয়ে।
তার পরিবারের অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে সাদিয়াকে হত্যা করে ঘটনাটি আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
নিহতের পরিবার জানায়, শুক্রবার সাদিয়া তার দাদার কুলখানির অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাবার বাড়িতে আসেন। দুপুরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন সেখানে উপস্থিত হয়ে তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। একপর্যায়ে তাকে জোরপূর্বক সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যায়।
শ্বশুরবাড়িতে নেয়ার পর যৌতুকের দাবিতে সাদিয়াকে পুনরায় শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয় এবং জোরপূর্বক বিষপানে বাধ্য করা হয়। পরে বিকেল ৫টার দিকে স্বজনদের জানানো হয়, সাদিয়া বিষপান করেছেন এবং তাকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে। পরে সেখান থেকে ঢাকায় নেয়ার পথে রাত ৯টার দিকে চান্দিনায় পৌঁছালে তার মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর সংবাদ জানাজানি হলে সাদিয়ার দেবর ও শ্বশুর পালিয়ে যান বলে অভিযোগ করে সাদিয়ার পরিবার।
এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে বুড়িচং থানায় দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় নিহত সাদিয়ার দেবর রাব্বি হোসেনকে (২৪) প্রধান আসামি করে মোট ছয়জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন— সাদিয়ার দেবর রাব্বি হোসেন (২৪), শ্বশুর মোস্তফা (৬০), শাশুড়ি রহিমা খাতুন (৫০), স্বামীর বোন আমেনা খাতুন (২৬) ও সোনালী আক্তার (২০) এবং স্বামী হাবিবুর রহমান (২৮)।
নিহতের মা রুবি আক্তার বলেন, ‘প্রায় দুই বছর আগে আমার মেয়ের সাথে হাবিবের বিয়ে হয়। তাদের আট মাস বয়সী একটি ছেলেসন্তান রয়েছে। বিয়ের কিছুদিন পর স্বামী প্রবাসে চলে গেলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য আমার মেয়েকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে। পরিকল্পিতভাবে আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
বুড়িচং থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো: রাকিবুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় ইতোমধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।



