আড়াইহাজারে বিএনপির দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৩০

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দু’পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, গুলাগুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ) সংবাদদাতা

Location :

Narayanganj
বিএনপির দু’গ্রুপে সংঘর্ষ
বিএনপির দু’গ্রুপে সংঘর্ষ |নয়া দিগন্ত

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দু’পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, গুলাগুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে ছয়জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। পরে তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকালে উপজেলার মেঘনাবেষ্টিত কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের খালিয়ারচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি কবির হোসেনের সাথে ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ফকির জহিরুল ইসলামের অনুসারীদের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। কবির হোসেন তার বলয় ভারী করার জন্য ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের অনুসারীদের দলে আনেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে বেশ কয়েকবার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে শুক্রবার বিকেলে যুবদল নেতা জহিরুল ইসলাম ফকিরের লোকজনের সাথে বিএনপি নেতা কবির হোসেনের লোকজনের বাগ্বিতণ্ডা হয়।

এদিকে পূর্বের ঘটনা ছাড়াও সম্প্রতি জহিরুল ইসলামের চাচা রিপনকে হত্যার ঘটনায় ১৭ জনের নামে মামলা করা হয়। মামলার আসামিরা জামিন না নিয়ে এলাকায় প্রবেশ করতে চাইলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ সময় খালিয়ারচর পশ্চিমপাড়া ফকির বাড়ি জামে মসজিদের সামনে উভয় পক্ষের শত শত লোক দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রসহ নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষের সময় গুলাগুলিসহ ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

ঘটনায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় খালিয়ারচর এলাকা। আতঙ্কে ছুটাছুটি করতে থাকে লোকজন। পরে খবর পেয়ে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এখনো এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

আহতরা হলেন- খায়ের উদ্দিন (৪২), আব্দুল মতিন (৫০), জোনায়েত মিয়া (২৫), কালু মিয়া (৩৭), খলিলুর রহমান (৪০), আল আমিন (২৫), পশিদ মিয়া, (৫০), মনির হোসেন (৩৫), মজিবুর রহমান (৫০), সালাউদ্দিন মিয়া (৩৫), বিল্লাল হোসেন (৩৫), শুভ মিয়া (২৫), জুনায়েদুর রহমান জুনায়েত (২৫), রাজীব মিয়া (১৫), আহাদ মিয়া (১৮), তামিম মিয়া (১৪), আব্দুর রহিম (৪৫), আলমগীর হোসেন (৪২), স্বপন মিয়া (৪০), আমির আলী (৬০), জমির আলী (৫০), রাফি মিয়া (২৪)। এদের মধ্যে খায়ের উদ্দিন (৪২), আব্দুল মতিন (৫০), জোনায়েত মিয়া (২৫), কালু মিয়া (৩৭), খলিলুর রহমান (৪০) ও আল আমিনকে (২৫) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিদের আড়াইহাজার, সোনাগাঁও, হোমনা ও মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

ফকির জহিরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘হত্যা মামলায় জামিন না নিয়ে কবিরের লোকজন গ্রামে প্রবেশ করতে চাইলে এলাকাবাসী এতে বাধা দেয়। ফলে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে।’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কবির বলেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই জহিরের লোকজন আমাদের উপর হামলা করে।’

আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার নাসির উদ্দিন বলেন, ‘পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ঘটনাস্থল ও এর আশপাশে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’