সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে প্রতিযোগিতামূলকভাবে চলছে বালু লুটপাটের কাণ্ড। বালুখেকোদের বেপরোয়া এসব তাণ্ডবে ধ্বংস হচ্ছে এলাকার কাঁচা-পাকা সড়কগুলো।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের মরা চেলা, ঘিলাছড়া, সুনাইত্যা, দ্বীনেরটুক, শ্রীপুর গ্রাম, বাংলাবাজার ইউনিয়নের মৌলা নদী, বালু নদী, ঘিলাতলী ও বাঁশতলা এলাকা বালু লুটপাটকারীদের হটস্পটে পরিণত হয়েছে। এরই মাঝে কোটি টাকার বালু লুটপাট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এতে এলাকায় ভাঙন বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট এবং হুমকির মুখে রয়েছে পরিবেশ। এমন পরিস্থিতিতে ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, নরসিংপুর ইউনিয়নের সুনাইত্যা থেকে দ্বীনেরটুক মাদরাসার পাশের সড়কের মরা চেলা নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে ব্রিজের গোড়া দেখা যাচ্ছে। ঝুঁকিতে পড়ছে যানচলাচল এবং ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে ঘিলাছড়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ নিকটবর্তী এলাকা। নরসিংপুর বাজার-সিরাজপুর গ্রামে যাতায়াতের রাস্তায় বেশ কয়েক জায়গায় পাকা সড়ক ভেঙে পড়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়ছে এলাকাবাসী।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বেশির ভাগ রাতের আঁধারে এই অপকর্ম করছে বালুখেকোরা। দিনের বেলাতেও নিত্যনতুন কৌশলে বালু লুট করে নিচ্ছে তারা। প্রথমে বালু উত্তোলন করে ছোট ছোট স্টক করে রাখা হয় বিভিন্ন জায়গায়। পরে সময় বুঝে গাড়ি লুট করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, প্রশাসনের অসাধু কিছু কর্মকর্তাদের যোগসাজশেই চলে বালু লুটপাটের এই কাণ্ড। বিভিন্ন সময় বাজার-হাটে এবং নির্জন এলাকায় বালুখেকো চক্রের সদস্যদের সাথে প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তাকে দীর্ঘক্ষণ সময় কাটাতে দেখা যায়।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা আরো বলেন, অনেক সময় প্রশাসনের কর্মকর্তাদেরকে বালু লুটপাটের বিষয়ে তথ্য দিলে তারা উল্টো তথ্যদাতার পরিচয় প্রকাশ করে দেয় এবং বালুখেকো চক্রকে সতর্ক করে দেয়। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগতে হয় তথ্যদাতাদের। ফলে প্রশাসনকে তথ্য দিতে ভয় পায় স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘আমি তিন দিন হয়েছে এই থানায় এসেছি। এখনো এসব বিষয়ে জানাশোনা হয়নি। সাংবাদিক ও স্থানীয় সমাজ নির্দ্বিধায় আমাকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন। সব অনিয়ম বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।‘
অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরুপ রতন সিংহ জানান, ‘অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে উপজেলা প্রশাসনের কঠোর নজরদারি রয়েছে। তথ্য পাওয়া মাত্রই অভিযান করা হচ্ছে।’



