লালমনিরহাটের পাটগ্রামে বুড়িমারী স্থলবন্দরের কাস্টম অফিসে কমপ্লিট (কলম বিরতি) শার্টডাউন চলছে। গত দুই দিনের এই শার্টডাউনে আমদানি-রফতানি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে প্রায় দুই কোটি টাকা।
রোববার (২৯ জুন) দুপরে সরেজমিনে বন্দরে গিয়ে দেখা গেছে- রাস্তায় কোনো যান নেই, নেই পণ্যবাহী কোনো ট্রাক। জিরো পয়েন্ট থেকে বিজিবির চেকপোস্টের সড়কটি সম্পূর্ণ ফাঁকা। অথচ এর আগে বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় যেসব পণ্যবাহী ট্রাক লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতো, সেসবের কোনো চিহ্নও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
কাজ না থাকায় শ্রমিকরা বসে আছেন বিরস বদনে। জিরো লাইনে গিয়ে দেখা গেছে- যে লোহার গেট দিয়ে ভারত-ভুটান থেকে পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করত, সেই গেটটি সম্পূর্ণ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। কাস্টম অফিস স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ওয়্যার হাউজ এরিয়াসহ রাস্তাঘাট সবগুলোই ফাঁকা। দেখে মনে হবে যেনো এক ভূতুড়ে পরিবেশ।
সংশ্লিষ্ট কাস্টম সূত্রে জানা গেছে- জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আব্দুর রহমানকে অপসারণের দাবিতে কাস্টম কর্তৃপক্ষের ডাকে সারাদেশের ন্যায় বুড়িমারী স্থলবন্দরের শুল্ক স্টেশনে শনিবার (২৮জুন) থেকে (শার্টডাউন) কলম বিরতি শুরু হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাস্টমের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তাদের শার্টডাউন অব্যহত থাকবে।’ তবে তাদের বেশ কিছু দাবির মধ্যে আরো একটি অন্যতম দাবি হলো- কাস্টম ক্যাডারে প্রশাসন ক্যাডারের অন্তর্ভুক্তি না করা।
বুড়িমারী সিঅ্যান্ডএফ অ্যাজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নিয়াজ নাহিদ বলেন, কলম বিরতির কারণে বুড়িমারী কাস্টমে গত দুই দিনে প্রায় দুই কোটি টাকা সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে কাজ না থাকায় বন্দরে কর্মরত হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। এসব শ্রমিকদের মধ্যে লোড-আনলোড শ্রমিক দুই হাজার দু শ’, সিঅ্যান্ডএফ শ্রমিক ৬০ জন, সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারী চার শ’ এবং প্রেশার মেশিন শ্রমিক রয়েছেন প্রায় আট হাজার।
তিনি দাবি করেন- কাস্টম কর্মকর্তাদের কলম বিরতির কারণে সীমান্তের ওপারে ভারতের চাংড়াবান্ধায় প্রায় দুই হাজার পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়ে আছে। এ ছাড়াও বন্দরে ১১টি পাথর বোঝাই ভারতীয় ট্রাকের পণ্য খালাস করতে না পেরে চালকরা ট্রাক রেখে দেশে ফিরে গেছেন।
বুড়িমারী আমদানি-রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু রাইয়ান আশয়ারী রছি দ্রুত এ অচলাবস্থার নিরসন করে সরকারের কাছে বন্দর সচল রাখার দাবি জানান।