চবিতে গ্রামবাসীর আড়ালে দফায় দফায় শিক্ষার্থীদের উপর নজিরবিহীন হামলা

শনিবার রাতের সংঘর্ষের পর যে সকল শিক্ষার্থী দুই নম্বর গেট এলাকার বিভিন্ন কটেজে থাকেন তাদের উপর রোববার দুপুরে আক্রমণ করা হয়।

নূরুল মোস্তফা কাজী, চট্টগ্রাম ব্যুরো

Location :

Chattogram
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয়দের সংঘর্ষ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয়দের সংঘর্ষ |নয়া দিগন্ত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দুই নম্বর গেট এলাকায় নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছে পার্শ্ববর্তী গ্রামবাসীর আড়ালে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা। শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসীর আড়ালে থাকা বহিরাগত সন্ত্রাসীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন প্রো-ভিসি ও প্রক্টরসহ বহু শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

শনিবার রাতভর তাণ্ডব চালানোর পর আজ রোববার দুপুরে পাশ্ববর্তী জোবরা গ্রামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমাঝোতা করতে গেলে আবারো হামলা করে তারা।

ক্যাম্পাস সূত্র জানায়, গ্রামবাসীর আড়ালে দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দলের এক নেতার উস্কানিতে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এসময় শিক্ষার্থীদের বিলের মাঝে দৌড়িয়ে কোপাতেও দেখা যায়।

সূত্র জানায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (অ্যাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান ও প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফসহ শিক্ষকেরা দু’পক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সন্ত্রাসীদের হামলায় ড. কামাল উদ্দিন, ড. শামীম উদ্দিন খান ও ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফসহ অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী দুপুরের হামলায় আহত হন।।

ক্যাম্পাস সূত্র জানিয়েছে, শনিবার রাতের সংঘর্ষের পর যে সকল শিক্ষার্থী দুই নম্বর গেট এলাকার বিভিন্ন কটেজে থাকেন তাদের উপর রোববার দুপুরে আক্রমণ করা হয়। গ্রামবাসীর হামলা থেকে সহপাঠীদের রক্ষায় শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এতে তাদের ওপরও হামলা চালানো হয়।

এর আগে, শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেট এলাকায় শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে স্থানীয়রা। এতে অন্তত ৭০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় দুই নম্বর গেট এলাকার জনৈক শাহাবুদ্দিনের বাসায় ভাড়া থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের এক শিক্ষার্থী। রাতে ওই ছাত্রীকে বাসার গেটে ঢুকতে দেয়নি ভবনের দারোয়ান। এতে দুজনের বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে দারোয়ান ওই ছাত্রীকে মারধর করেন। এ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন শিক্ষার্থীরা। এসময় মাইকে ঘোষণা দিয়ে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন স্থানীয়রা। পরে শিক্ষার্থীরাও চবির সোহরাওয়ার্দী হলের মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিলে দু’পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। দীর্ঘ সময় সংঘর্ষের পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে রাত সাড়ে ৩টা নাগাদ পরিস্থিতি শান্ত হয়।

চবি মেডিক্যালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মুহাম্মদ টিপু সুলতান জানিয়েছেন, বহু শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছেন। আমরা তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। যাদের অবস্থা খুবই গুরুতর আমরা তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি।