দেশের সর্ববৃহৎ মেগাপ্রকল্প পদ্মা বহুমুখী সেতুতে আধুনিক ও বিরতিহীন ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন (ইটিসি) পদ্ধতিতে শতাধিক যানবাহনের সফল রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে। এ পদ্ধতির মাধ্যমে নির্ধারিত ইটিসি লেন ব্যবহার করে গাড়ি থামানো ছাড়াই সর্বনিম্ন ৩০ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টোল পরিশোধ করে সেতু পার হওয়া যাচ্ছে। দেশের টোল ব্যবস্থাপনায় এটি এক নতুন মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পদ্মা সেতু সাইট অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে লাইভ পাইলটিং আকারে ইটিসি পদ্ধতি চালু করা হয়।
আজ শুক্রবার পর্যন্ত এ পদ্ধতিতে মোট ১০৩টি যানবাহন রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ইমাদ পরিবহনের ৪৮টি বাস ছাড়াও রয়েছে প্রাইভেট কার, পিক-আপ ও মাইক্রোবাস। এই ১৭ দিনে ইটিসি পদ্ধতিতে মোট টোল আদায় হয়েছে ১৪ লাখ ২৬ হাজার ৩৫০ টাকা।
পদ্মা সেতুর সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী (টোল, ব্রিজ অ্যান্ড বিইএফ, রোড আরটিডব্লিউ অ্যান্ড বিল্ডিং) আবু সায়াদ নিলয় বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ‘ইটিসি পদ্ধতিতে সেতু পারাপারে জনগণ বাইরের দেশের মতো নন-স্টপ টোলের অভিজ্ঞতা পাচ্ছেন। আশা করছি, এ পদ্ধতির ব্যবহার দিন দিন বাড়বে। তবে নতুন একটি সিস্টেমে অভ্যস্ত হতে জনগণের কিছুটা সময় লাগবে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরো জানা গেছে, ইটিসি ব্যবহারে আগ্রহী গ্রাহকদের প্রথমে ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের ‘ট্যাপ’ (Trust and Pay) অ্যাপে গিয়ে ‘D-Toll’ অপশনে গাড়ি রেজিস্ট্রেশন ও রিচার্জ সম্পন্ন করতে হয়। এরপর পদ্মা সেতুর রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন (RFID) বুথে প্রথমবারের মতো ট্যাগ চেক ও রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম শেষ করতে হয়। প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে ব্যবহারকারীরা নির্ধারিত ইটিসি লেন ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টোল পরিশোধ করতে পারেন। তবে মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীরা এই পদ্ধতির আওতায় পড়ছেন না।
সেতু কর্তৃপক্ষের আশা, ভবিষ্যতে ‘ট্যাপ’ ছাড়াও নগদ, বিকাশসহ অন্যান্য ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাপ যুক্ত হলে ইটিসি ব্যবহারে গ্রাহক সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। এ লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের এটুআই কর্মসূচির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সমন্বয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ইটিসি পদ্ধতির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ম্যানুয়াল টোল আদায়ের কারণে সৃষ্ট যানজট ও সময় নষ্টের ভোগান্তি কমবে এবং দেশের টোল ব্যবস্থাপনায় একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন সূচিত হবে।