টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মির্জা মো: তারেক ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের আগে ছিলেন ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে দাপিয়ে বেড়াতেন পুরো ক্যাম্পাস। করেছেন নানা অপকর্ম। গতবছর ৫ আগস্টের পর আশ্রয় নেন ছাত্রদলে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। নারী কেলেঙ্কারি ও সহিংস ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিন সেমিস্টারের জন্য তাকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একই সাথে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বহিষ্কারের বিষয়টি জানাজানি হলে ক্যাম্পাসে সৃষ্টি হয় চাঞ্চল্য।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গত বছরের ১৯ মার্চ (১১ রমজান) গণিত বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থীর সাথে আপত্তিকর অবস্থায় তারেককে ক্যাম্পাসের একটি ব্যাচেলর মেসে দেখা যায়। রমজান মাসে এ ধরনের আপত্তিকর ঘটনায় প্রতিবাদ জানালে ২০ মার্চ রাতে তারেক ছাত্রলীগের ২০/২৫ জন কর্মী নিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালান। এতে ওই শিক্ষার্থী মারাত্মকভাবে আহত হন এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
এ বিষয়ে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ করা হলেও ৫ আগস্ট পূর্ববর্তী প্রশাসন দীর্ঘদিন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। অবশেষে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় রিজেন্ট বোর্ডের ২৫০ তম সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক তারেককে আগামী তিন সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার ও আর্থিক জরিমানা করা হয়।
তারেক ক্যাম্পাস জীবনের শুরুতে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। ক্যাম্পাস ও আবাসিক হলে দাপট দেখানোর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণায় তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নিতেন। তবে গত ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে তিনি হঠাৎ ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন।
সম্প্রতি ছাত্রদলের ৭৩ ভোটারের কাউন্সিলের মাধ্যমে মাভাবিপ্রবিতে নতুন কমিটি গঠিত হলে সেখানে তারেকের ভোটার নম্বর ছিল ৫১। এমনকি ৯ সেপ্টেম্বরে বহিষ্কারের আদেশ ও ক্যাম্পাসে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পরও গত ১৩ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে ছাত্রদলের পাম্পলেট বিতরণ কার্যক্রমেও তাকে অংশ নিতে দেখা যায়।
শিক্ষার্থীরা জানান, ছাত্রলীগ থেকে ছাত্রদলে যোগ দিয়েও তারেক ক্যাম্পাসে দাপট দেখাতেন। তিনি নানা অনিয়মের সাথে জড়িত ছিলেন। নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় শাস্তি পাওয়ায় তারা প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।