সিলেটে ন্যাশনালিস্ট সার্কেলের সেমিনার

নতুন বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কর্মসংস্থান

‘নতুন বাংলাদেশে আমরা দেখতে চাই দুর্নীতিমুক্ত সমাজ, সবার সমান অধিকার এবং বাংলাদেশী পরিচয়ের ঐক্য। ভিন্নমত থাকতে পারে, কিন্তু আমরা সবাই একই জাতিসত্তার অংশ।’

এমজেএইচ জামিল, সিলেট ব্যুরো

Location :

Sylhet
সিলেটে ন্যাশনালিস্ট সার্কেলের সেমিনার
সিলেটে ন্যাশনালিস্ট সার্কেলের সেমিনার |নয়া দিগন্ত

গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি। এর সাথে প্রয়োজন নারীর ক্ষমতায়ন, পলিসি-ভিত্তিক বুদ্ধিবৃত্তিক রাজনৈতিক চর্চা এবং প্রশিক্ষিত কর্মীবাহিনী গড়ে তোলা। আওয়ামী কালচারের পুনরাবৃত্তি রোধ করাও হবে সময়ের দাবি।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) বিকেলে সিলেট নগরীর দরগা গেইটের কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের শহীদ সুলেমান হলে দ্য ন্যাশনালিস্ট সার্কেল (টিএনসি) আয়োজিত ‘নবজাগরণ, জাতীয়তাবাদ এবং আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

বক্তারা বলেন, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান প্রমাণ করেছে- তরুণ প্রজন্ম রাজনীতির পুরনো ধারা আর চায় না। তারা নীতি, স্বচ্ছতা, এবং সবার জন্য সমান সুযোগ চায়। ক্ষমতায় যে-ই আসুক না কেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে; রাজনৈতিক অঙ্গনে দুর্নীতি, দমন-পীড়ন ও দলীয়করণমুক্ত একটি সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

তারা আরো বলেন, শুধু দলীয় কর্মীদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করলে সমাজের সামগ্রিক উন্নয়ন হবে না। সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের জন্য সমান সুযোগ দিতে হবে, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মেধা ও যোগ্যতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। একইসাথে, আধুনিক ও দায়িত্বশীল রাজনীতি গড়তে প্রশিক্ষিত কর্মীবাহিনী এবং পলিসি-ভিত্তিক বুদ্ধিবৃত্তিক রাজনৈতিক চর্চা জরুরি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় ফরেইন অ্যাফেয়ার্স টিমের সদস্য ড. মোহাম্মদ এনামুল হক চৌধুরী।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশে আমরা দেখতে চাই দুর্নীতিমুক্ত সমাজ, সবার সমান অধিকার এবং বাংলাদেশী পরিচয়ের ঐক্য। ভিন্নমত থাকতে পারে, কিন্তু আমরা সবাই একই জাতিসত্তার অংশ।

দি ন্যাশনালিস্ট সার্কেলের প্রতিষ্ঠাতা ব্যারিস্টার রিয়াসাদ আজিম আদনানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন-শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মো: সাজেদুল করিম। মুখ্য আলোচক ছিলেন জবান ম্যাগাজিনের সম্পাদক ও চিন্তক রেজাউল করিম রনি।

অতিথির মধ্যে বক্তব্য রাখেন- প্রবীণ ব্যক্তিত্ব ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সভাপতি ডা: শামীমুর রহমান, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা: জিয়াউর রহমান চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় কৃষি ও ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সহ-সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক ছাত্রদল নেতা মিজানুর রহমান চৌধুরী এবং সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী।

মহানগর দায়রা জজ আদালতের অ্যাডিশনাল পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মুকিত অপির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভার শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন কৃষকদল নেতা নোমান আহমদ। স্বাগত বক্তব্য দেন টিএনসির পরিচালক নাফিস জোবায়ের চৌধুরী।

সভায় জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং মাগফেরাত কামনা করা হয়।

উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্বে তরুণ প্রজন্ম ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ নবজাগরণ, জাতীয়তাবাদ ও আগামীর বাংলাদেশ নিয়ে প্রশ্ন করেন, যার জবাবে অতিথিরা নিজেদের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক অবস্থান ও প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।