পরিশ্রম, স্বপ্ন আর মাসের পর মাস যত্নে গড়া একটি পুকুর। এক রাতেই সবকিছুই নষ্ট হয়ে গেলো বিষে। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে মাছ চাষী মো: জুয়েল শেখের ৬০ শতাংশের পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ নিধনের হৃদয়বিদারক অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার তারুন্দিয়া ইউনিয়নের শ্রীপুরজিথর গ্রামে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত মাছ চাষী জুয়েল শেখ বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। তার আগে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে প্রতিপক্ষরা পরিকল্পিতভাবে পুকুরে বিষ ঢালে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন—প্রয়াত কদ্দুস শেখের ছেলে রতন শেখ (৫০), মো: খলিল শেখ (৫৫), মো: মানিক শেখ (৪৫), রতনের স্ত্রী সুফিয়া খাতুন (৪৫) এবং তাদের দুই ছেলে রাকিব শেখ ও শাকিব শেখ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়—পুকুরের চারিপাশে অসহায়ভাবে ভেসে থাকা রুই, কাতলা, সিলভার কার্প, সরপুটি, শিংসহ নানান প্রজাতির মৃত মাছ। স্বপ্ন ভাঙার এই নিষ্ঠুর দৃশ্য দেখেই বারবার ভেঙে পড়ছিলেন উদ্যোক্তা জুয়েল।
তিনি বলেন, ‘শত্রুতার জেরে রতন শেখ ও তার লোকজন পানি বিষ বা কিটনাশক জাতীয় কিছু মিশিয়েছে। আমার চোখের সামনে আমার স্বপ্নকে হত্যা করা হলো। বর্তমান বাজারদরে প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ শেষ হয়ে গেছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।’
অভিযুক্তদের বাড়িতে গিয়ে কোনো পুরুষ সদস্যকে পাওয়া যায়নি। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে ফোন দিলেও পাওয়া যায়নি। বাড়িতে থাকা মানিক শেখের স্ত্রী মাসিদা বেগম বলেন, ‘মনিহারী দোকানে ডিম ক্রয় নিয়ে জুয়েলদের সাথে ঝগড়া হয়েছিল।’ মাছ মরে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে আমরা কিছুই জানি না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘বৈরিতার কারণে যদি কেউ বিষ দিয়ে মাছ নিধন করে থাকে—এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিকে রোববার অফিসে আসতে বলা হয়েছে, প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হবে।’
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। ইতোমধ্যে একজন অফিসারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্তের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’



