জাতীয় নাগরিক পাটি’র (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘আমাদের সকল রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমাদের লড়াই শেষ হয়নি। আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। বিগত হাসিনা সরকার কুমিল্লার বিএনপি-জামায়াতের উপর অনেক নিপীড়ন চালিয়েছে। আমরা আওয়ামী লীগের সাথে কারো শখ্যতা মেনে নিব না। আওয়ামী লীগ যদি আবার ক্ষমতায় আসে তাহলে চার কোটি মানুষকে হত্যা করবে।’
বুধবার (২৩ জুলাই) বিকেলে কুমিল্লায় টাউন হল মাঠে কুমিল্লা মহানগর ও জেলা শাখার আয়োজনে এনসিপি’র শোক পদযাত্রা পরবর্তী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘মাইলস্টোন কলেজে বিমান দুর্ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে। লাশের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করতে হবে। মাইলস্টোনের শিক্ষকদের কেন নির্যাতন করা হয়েছে তার জবাবদিহি সরকরারকে করতে হবে। একইসাথে ধ্বজভঙ্গ যুদ্ধ বিমান দিয়ে কেন প্রশিক্ষণ চলবে তার জবাবও সরকারকে দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের মাগফিরাত কামনা করছি। আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে। বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে আওয়ামী লীগ আলু পোড়া দিয়ে খেতে চেয়েছিল। লাশ গুমের গুজব রটিয়ে দেশে পরিকল্পিতভাবে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল। সরকারকে বলবো লাশ নিয়ে যেহেতু একটি বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে তাই সঠিক তথ্য জাতীর কাছে পরিষ্কার করতে হবে।‘
এনসিপি’র এ নেতা বলেন, ‘কুমিল্লাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বঞ্চিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের কোনো জেলাকে এভাবে বঞ্চিত করা হয়নি। কুমিল্লার একটি সাংবাদিক সম্মেলনে শেখ হাসিনা দম্ভ করে বলেছিল কুমিল্লার আগে যেহেতু কু আছে সেজন্য কুমিল্লা নামে বিভাগ দেয়া হবে না। পবিত্র কোরআনের সুরা লোকমানে বলা হয়েছে ‘তোমরা দম্ভ করো না, অহংকার করো না। যারা দম্ভ করে আল্লাহ তাদের অপছন্দ করেন। আমরা সেইদিন এর প্রমাণ পেয়েছি হাসিনাকে ধ্বংস করার মধ্য দিয়ে।’
প্রিয় কুমিল্লাবাসীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘কুমিল্লা নামেই কুমিল্লার বিভাগ হবে।’
তিনি বলেন, ‘কুমিল্লার রাস্তাঘাট গুলো সংস্কার প্রয়োজন। বিশেষ করে কুমিল্লা-সিলেট হাইওয়ে রাস্তার দুই কিলোমিটারও ভালো পাওয়া যাবে না। সরকার যদি এসব রাস্তাঘাটের সংস্কার না করে তাহলে আমরা চাঁদা তুলে এসব রাস্তার সংস্কার করব।’
তিনি আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সময় আমরা দেখেছি কুমিল্লায় পরিকল্পিতভাবে মন্দিরে পবিত্র কোরআন রেখে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করা হয়েছে। আমরা অনেকে ভেবেছি আমাদের লড়াই শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু না, আমাদের লড়াই এখনো শেষ হয়নি। আমাদের দীর্ঘ লড়াইয়ের জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
কুমিল্লা মহানগর এনসিপি’র আহ্বায়ক সিরাজুল হকের সভাপতিত্বে এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, সিনিয়র মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা দিনা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমীন, যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশির, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দিন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ, কুমিল্লা অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক নাভিদ নওরোজ শাহ, এনসিপি‘র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হাফসা জাহান, যুবশক্তির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সংগঠক মাজহারুল ইসলাম হানিফ, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিভাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের মাগফিরাত কামনা করে শোক সমাবেশের শুরুতে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।