দত্তক নেয়া নাতনীর প্রতারণায় বিপাকে শতবর্ষী বৃদ্ধা

বড়াইগ্রামে বাড়ির দখল নিতে মা-মেয়েকে পিটিয়ে বের করে দেয়ার অভিযোগ

রোববার (২৭ এপ্রিল) উপজেলার মহানন্দাগাছা গ্রামের ওই বৃদ্ধা ও তার ষাটোর্ধ্ব মেয়ে মনোয়ারা বেগমকে (৬০) টেনেহিঁচড়ে ও পিটিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

মন্তাজুর রহমান রানা, বড়াইগ্রাম (নাটোর)

Location :

Natore
আমেনা বেগম (১১০)
আমেনা বেগম (১১০) |নয়া দিগন্ত

বড়াইগ্রামে দত্তক নেয়া নাতনীর প্রতারণায় ভিটেবাড়ি হারানোর উপক্রম হয়েছে আমেনা বেগম (১১০) নামে এক শতবর্ষী বৃদ্ধার।

রোববার (২৭ এপ্রিল) উপজেলার মহানন্দাগাছা গ্রামের ওই বৃদ্ধা ও তার ষাটোর্ধ্ব মেয়ে মনোয়ারা বেগমকে (৬০) টেনেহিঁচড়ে ও পিটিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। পরে স্বজনরা তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

মারপিটের শিকার আমেনা বেগম মহানন্দাগাছা গ্রামের মৃত ছফের উদ্দিনের স্ত্রী এবং আমেনা বেগম আতাব উদ্দিনের স্ত্রী।

স্থানীয়রা জানান, আমেনা বেগমের মেয়ে মনোয়ারা বেগম নিঃসন্তান। প্রায় ৩৫ বছর আগে মনোয়ারা বেগম সাথী আক্তার লিপি নামের এক শিশুকে দত্তক নেন। পরে তাকে লালন পালন করে পাবনার চাটমোহরের আনকুটিয়া গ্রামে বিয়ে দেন। পরবর্তী সময়ে মনোয়ারা তার স্বামীর জমি বিক্রি করে মায়ের ভিটায় পাঁচতলা ফাউন্ডেশন করে একতলা বিশিষ্ট একটি পাকা বাড়ি নির্মাণ করেন। বর্তমানে বৃদ্ধা মাকে নিয়ে তিনি সে বাড়িতেই বসবাস করে আসছিলেন।

কিছুদিন আগে নাতনী লিপি নানীকে ডাক্তার দেখানোর জন্য বনপাড়ায় নিয়ে গোপনে বাড়ির জমি নিজ নামে রেজিস্ট্রি করে নেন। পরে লিপি সেই জমি একই গ্রামের আব্বাস আলীর কাছে বিক্রি করে দেন। এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে আমেনা বেগম লিপির নামে আদালতে মামলা করেন।

কিন্তু রোববার আব্বাস আলী ও তার ভাই নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে ১০-১২ জন ব্যক্তি মনোয়ারা বেগম ও তার মেয়ে আমেনা বেগমকে পিটিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এ সময় তারা বাড়িঘরে হামলা ও ভাংচুরও করে। পরে খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ব্যাপারে মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘নিজের সব সম্বল বেচে বাড়িটি করেছি। কিন্তু যে মেয়েকে পালক নিয়ে আদর-যত্নে বড় করেছি, সে-ই কৌশলে আমার মায়ের কাছ থেকে বাড়ির ভিটা লিখে নিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে। আমরা এখন কোথায় যাব?’

আব্বাস আলী বলেন, ‘আমি টাকা দিয়ে জমি কিনেছি। সেই জমির দখল নিতে গিয়েছিলাম। সেখানে ধাক্কাধাক্কি হলেও কাউকে মারপিট করার অভিযোগ সঠিক নয়।’

বড়াইগ্রাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’