সাভারের আশুলিয়ায় তাজরীন গার্মেন্টস ট্রাজেডির ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন আহত ও নিহত শ্রমিক ও তাদের পরিবার। নিহত শ্রমিকদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানান তারা।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকালে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তাজরীন গার্মেন্টসের সামনে নিহত শ্রমিকদের পরিবারের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
পরে কারখানার মালিক দেলোয়ারসহ ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, নিহত শ্রমিকের পরিবারকে পুনর্বাসন, আহত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা, এক জীবনের আয়ের সমপরিমাণ অর্থ ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং দেশের সব শিল্প কারখানার শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের নেতা ও আহত-নিহতের পরিবারের স্বজনরা।
শ্রমিক সংগঠনের নেতারা জানান, আলাপ-আলোচনা, শ্রদ্ধা নিবেদন ও গণমাধ্যমের প্রচারেই আটকে আছে তাজরীন ট্রাজেডি। অথচ মূলহোতা কারখানার মালিক দেলোয়ারসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় হতাশ নিহত ও আহতের পরিবারগুলো।
তারা আরো জানান, ঘটনার এক যুগ পেরিয়ে গেলেও সরকার ও বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি বিজিএমইএ’র কাছ থেকে মেলেনি তেমন কোনো সহায়তা। পুনর্বাসন ও সুচিকিৎসা পাননি হতাহতরা। তবে বর্তমান সরকারের কাছে তাদের প্রত্যাশা অনেক।
আহত শ্রমিকরা জানান, তাদের আশ্বাস দেয়া হলেও বাস্তবে কিছুই পূরণ করেনি কেউ। তাই তো পাওয়া না পাওয়ার হিসাব নিয়ে বসে আছেন আহত শ্রমিকরা।
তারা আরো জানান, ওই ঘটনায় প্রাণ হারান ১১৭ জন শ্রমিক, আহত হন দুই শতাধিক। বেঁচে যাওয়া শ্রমিকরা এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন সেদিনের দুঃসহ স্মৃতি। শরীরে যন্ত্রণা ও সংসারের অভাব-অনটন নিয়ে চলছে জীবনযুদ্ধ। কিন্তু দোষীদের শাস্তি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ তারা।
পাশাপাশি বর্তমান সরকারের কাছে প্রত্যাশার কথাও জানিয়েছিন শ্রমিকরা।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরের তাজরীন ফ্যাশন কারখানায় আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যেই সেই আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে পুরো ভবনে। তখন কারখানায় কাজ করছিলেন হাজারের অধিক শ্রমিক। বাইরে থেকে তালা বন্ধ থাকায় বের হতে পারেননি কেউ। ভেতরে আটকা পড়া অবস্থায় আগুনে পুড়ে নিহত হন ১১৭ জন শ্রমিক এবং আহত হন প্রায় দুই শতাধিক।
এ ঘটনায় ভবন থেকে লাফ দিয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন অনেক শ্রমিক।



