জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সংস্কারের কাজ ফেলে রেখেই উধাও হয়েছেন ঠিকাদার। ফলে খানাখন্দে ভরা এ সড়কে জনদুর্ভোগ বাড়ছে। প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা, ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পথচারী ও এলাকাবাসীকে।
এতে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের বেড়াখাই, নন্দীগ্রাম, নিকড়দিঘী হয়ে আওলাই ইউনিয়নের ধাপেরহাট পাগলাবাজার থেকে দরগা বাজার পর্যন্ত আট দশমিক ৪৫০ কিলোমিটার রাস্তা প্রশস্ত করণ ও সংস্কারের কাজ শেষ না হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ জনগণ।
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের অধীন রুরাল কানেকটিভিটি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (আরসি আইপি এএফ-২)-এর আওতায় গত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে বেড়াখাই এর তেলিপুকুর থেকে ধাপেরহাট, দরগা বাজার হয়ে কামদিয়া সীমানা পর্যন্ত আট দশমিক ৪৫০ কিলোমিটার রাস্তা প্রশস্ত করণের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্প (এডিপি) ও সরকারি নিজস্ব অর্থায়নে (জিওবি) প্রায় ১১ কোটি টাকার টেন্ডার হয়। কাজটি পায় নওগাঁ জেলার জুয়েল ইলেকট্রনিক ও মোজাফফর বিপণী বিতান নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেই লক্ষে ২০২৪ সালের ৭ এপ্রিল রাস্তা প্রশস্ত করণের জন্য পাকা রাস্তার দু’পাশে গর্ত করে। তবে কাজ শুরুর অল্প কিছুদিন পরেই ঠিকাদারের লোকজন তাদের মালামাল নিয়ে রাতের আঁধারে পালিয়ে যায়। এর ফলে রাস্তার দু’পাশ খোঁড়া থাকায় বৃষ্টিতে খনাখন্দ, কাদা আর ধুলোতে পথচারী ও এলাকাবাসী ভয়াবহ দুর্ভোগের মধ্যে চলাচল করতে থাকে। এ অবস্থায় গত মাসের ১৮ তারিখে কাজের নির্ধারিত মেয়াদও শেষ হয়ে যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বেড়াখাই থেকে দরগা বাজার পর্যন্ত পুরা রাস্তার দু’পাশে খোঁড়া গর্তের কিছু অংশে খোয়া দিয়ে আংশিক ভরাট করা হয়েছে। তবে বেশির ভাগ অংশ দু’ধার খোঁড়া এবং তার উপর ঘাসে ঢেকে থাকায় ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করছে। রাস্তায় দু’টিভ্যান পাশাপাশি পার করা য়ায় না। রাতের বেলা গর্তে পড়ে মোটরসাইকেল আরোহীরা প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। রিকশাভ্যান গর্তে পড়ে উলটে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়ত। এমনিতেই গ্রামীণ রাস্তাগুলো সরু তার উপর উভয় পাশে গর্ত খুঁড়ে রাখায় দিনের পর দিন এ দুর্ভোগ আরো বাড়ছে।
ভ্যানচালক আজিজার রহমান বলেন, রাস্তার দু’পাশে খাল থাকায় আমরা এই রাস্তা দিয়ে যাত্রী নিয়ে যেতে পারি না। সাইকেল বা মোটরসাইকেলকে সাইট দিতে গিয়ে গর্তে পড়ে যেতে হয়। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে।
নন্দীগ্রাম বাজারের ব্যবসায়ী আবু রায়হান বলেন, রাস্তার কাজ শেষ না করেই ঠিকাদারের লোকজন পালিয়ে যাওয়ার কারণে বিপাকে পড়তে হয়েছে ব্যবসায়ীদের। রাস্তা খুঁড়ে রাখার কারণে কোনো যানবাহন ঢুকতে পারে না। ফলে ধান, চাল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পরিবহনে দুর্ভোগ পোহাতে হয় আমাদের। এ ব্যাপারে ঠিকাদারের মোবাইলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা প্রকৌশলী মো: মোবারক হোসেন বলেন, বর্ষা মৌসুমে কাজ করলে কাজের গুণগত মানের সমস্যা থেকে যায়। বর্ষা শেষ হওয়ার সাথে সাথে পুরোদমে এই রাস্তার কাজ শুরু হবে বলেও জানান।