পাকুন্দিয়ায় ব্রহ্মপুত্রে নিখোঁজ শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

শনিবার (১২ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে নৌকাডুবির স্থান থেকে ৫০০ গজ দূরে ভেসে উঠা লাশটি উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।

মুহিব্বুল্লাহ বচ্চন, পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ)

Location :

Pakundia
উদ্ধার কার্যক্রম
উদ্ধার কার্যক্রম |নয়া দিগন্ত

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় ব্রহ্মপুত্রে নৌকাডুবিতে নিখোঁজের ২০ ঘণ্টা পর ফারিয়া রহমান নীহা নীহা (৯) নামে এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

শনিবার (১২ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে নৌকাডুবির স্থান থেকে ৫০০ গজ দূরে ভেসে উঠা লাশটি উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।

নিহত শিক্ষার্থী হলেন, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার চৌদ্দশত ইউনিয়নের জালুয়াপাড়া গ্রামের আব্দুর রহমানের মেয়ে এবং কটিয়াদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল বলে জানা গেছে।

পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: বিল্লাল হোসেন লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টার কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার জালুয়াপাড়া গ্রামের আব্দুর রহমান ও নীপা আক্তার দম্পতি তাদের দুই মেয়ে নীলা এবং নীহাকে নিয়ে পাকুন্দিয়া উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের চরফরাদি ইউনিয়ের দক্ষিণ চরটেকী বেড়িবাঁধ এলাকায় ঘুরতে যান। সেখানে গিয়ে তারা একটি ছোট নৌকায় করে নদীতে পাড়ি জমান। কিছুদূর গিয়ে নৌকাডুবির কবলে পড়ে মা ও দুই মেয়ে পানিতে তলিয়ে যান। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আব্দুর রহমান ও তার স্ত্রী নিপা আক্তার এবং বড় মেয়ে কাশ্মীরা রহমান নীলাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পাকুন্দিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কাশ্মীরা রহমান নীলাকে (১৭) মৃত ঘোষণা করে। তিনি কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল সরকারি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। এসময় ছোট মেয়ে ফারিয়া রহমান নীহা নিখোঁজ হয়।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কিশোরগঞ্জ ইউনিটের একটি ডুবুরিদল উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। দীর্ঘসময় পাড় হয়ে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। সন্ধ্যা ৭টার দিকে উদ্ধার কাজ স্থগিত করে। আজ শনিবার সকাল থেকে আবারো উদ্ধার অভিযান শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। পরে দুপুর ১২টার দিকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে ৫০০ গজ দূরে লাশটি ভেসে উঠলে এটি উদ্ধার করা হয়।

সম্প্রতি পাকুন্দিয়া উপজেলার এই বেড়িবাঁধ এলাকাটি মিনি কক্সবাজার হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক খ্যাতি পেয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে ও এনিয়ে খবর ছাপা হয়। সেখানে প্রতিদিন বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজারো নারী-পুরুষ ভিড় করেন। কিন্তু এই স্পটটিতে ছিল না পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কয়েকটি স্পিডবোট এবং ছোট বড় নৌকা চলাচল করলেও লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই এগুলো পরিচালিত হতো।

এ ব্যাপারে পাকুন্দিয়া উপেজলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: বিল্লাল হোসেন বলেন, দুর্ঘটনার সাথে সাথেই পাকুন্দিয়া উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় জেলেদের নিয়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা শুরু করে গতকাল একজনের লাশ উদ্ধার করা হলেও একজন নিখোঁজ ছিল। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল নিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করেও তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। ঘটনারর এক দিন পর নিখোঁজের লাশটি দুর্ঘটনাস্থল থেকে ৫০০ গজ দূরে ভেসে উঠলে এটিকে উদ্ধার করা হয়। যেহেতু এই পর্যটন স্পটটিতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না এবং জীবনের ঝুঁকি ছিল সে জন্য সাময়িকভাবে এই পর্যটন স্পটটিকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে এটি আবার চালু করা হবে।