মাদক বিক্রির তথ্য প্রকাশ করা সন্দেহে অটোচালকের চোখ উপড়ে ফেলার অভিযোগ

আহত রমজান মিয়াকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।

মো: বোরহান উদ্দিন রব্বানী, শরীয়তপুর

Location :

Shariatpur

মাদক বিক্রির তথ্য প্রকাশ করে দেয়া সন্দেহে শরীয়তপুরের জাজিরায় রমজান মিয়া (৩৮) নামে এক অটোরিকশাচালকের চোখ উপড়ে ও হাত-পায়ের রগ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ওই এলাকার এক মাদক কারবারির বাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার পূর্বনাওডোবা ইউনিয়নের রুপবাবুরহাট এলাকায় এঘটনা ঘটে। আহত রমজান মিয়াকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।

পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকালে জাজিরা উপজেলার দক্ষিন বাইকশা গ্রামের শফি মোল্লার ছেলে রমজান মোল্লা তার ভাড়ায় চালিত অটোরিকশা নিয়ে জাজিরা থেকে নাওডোবা যাওয়ার পথে একই উপজেলার রুপবাবুর হাট এলাকার সুমন শিকদারসহ ৪/৫ জন মিলে ধরে সুমন শিকদারের বাড়ির পেছনের বাগানে নিয়ে যায়। পরে রমজানের দুই চোখ উপরে ফেলে এবং চার হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়।

বিষয়টি স্থানীয়রা টের পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে সুমন শিকদার তার দলবল নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ সময় শাহজান সম্রাট নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

এরপর বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সুমন শিকদারের বসতবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহত রমজান মিয়াকে উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী আবুল হোসেন শিকদার বলেন, ‘আমরা খবর পাই বাঁশঝাড়ে ভিতর এক লোককে মারধর করা হচ্ছে। পরে লোকজন নিয়ে সেখানে গিয়ে দেখি এক লোককে সুমন শিকদারসহ আরো কয়েকজন মারধর করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখেছে। পরে আমাদের দেখে সুমনসহ সবাই দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় শাহজাহানকে আমরা আটক করে পুলিশে দিয়েছি। সুমন শিকদার দীর্ঘদিন যাবৎ ওই এলাকায় মাদকের কারবার করে আসছে। আর তার বাড়ির পিছনে বাঁশবাগানে নিয়মিত মাদক ও জুয়ার আসর বসায়। সে কারণে আজ বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সুমনের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

আহত ভুক্তভোগী রমজান মোল্লা বলেন, ‘আমি অটো নিয়ে নাওডোবা যাওয়ার সময় সুমন শিকদার, সোহেল চাপলাসী, সোহেল চোকিদার, শাহজাহান সম্রাট, বাচ্চু সুমনসহ আরো কয়েকজন মিলে গাড়ি থামিয়ে আমাকে জোর করে বাঁশবাগানে নিয়ে আমার চোখ উঠিয়ে ফেলে এবং হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়। সুমন সিকদার দীর্ঘদিন ধরে মাদক কারবারের সাথে জড়িত। আমি পুলিশকে তথ্য দিয়েছি এমন সন্দেহ করে আমাকে এই অবস্থা করেছে ওরা। আমি এই হামলার বিচার চাই।’

এ ব্যাপারে পদ্মা দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহম্মেদ পারভেজ সেলিম বলেন, ‘এক ব্যক্তির চোখ উঠিয়ে ফেলা এবং হাত-পায়ের রগ কেটে ফেলা হয়েছে। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন দু’জনকে আটক করা হয়েছে। বিক্ষুব্ধ জনতা যার বাড়িটি পুড়িয়ে দিয়েছে তার বিরুদ্ধে মাদকসহ প্রায় ২০টি মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’