নড়াইলে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। বিক্রেতারা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এবার দাম কিছুটা কম আছে। এদিকে কোরবানি যোগ্য গরু-ছাগল ন্যায্য দামে কিনে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। এ বছর কোরবানির জন্য ৫৪ হাজারের বেশি গরু ও ছাগল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ইতোমধ্যে নড়াইলের তিনটি উপজেলার নয়টি হাটে কোরবানির পশু বেচাকেনা শুরু হয়েছে। কোরবানির হাটে বিক্রি জন্য ২৩ হাজার গরু ও ৩১ হাজারের বেশি ছাগল প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
গরু খামারি স্কুলশিক্ষক মনিরুজ্জামান, পাইকারি গরু বিক্রেতা মহসিন উদ্দিন, কৃষক আজমল মোল্যাসহ বিক্রেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর গরু ও ছাগলের দাম কিছুটা কম। গত কোরবানি হাটে যে ষাঁড় (গরু) এক লাখ থেকে এক লাখ ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেই ষাঁড় ক্রেতারা এবার দাম বলছেন, ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা।
এছাড়া ছাগলের দামও গত বছরের তুলনায় অনেক কম বলে দাবি করছেন ব্যাপারী ও বিক্রেতারা। তাদের দাবি, বড় আকারের ছাগল এবার ১৩ থেকে ১৫ হাজার টাকা দাম বলছেন ক্রেতারা। অথচ এসব ছাগল গত বছর বিক্রি করেছেন ১৭ থেকে ১৮ হাজার টাকা।
গরু-ছাগলের দাম কম হওয়ার কারণ হিসেবে বিক্রেতারা বলছেন, ‘এবার কোরবানি দেয়ার মতো লোকজন প্রথম দিকে হাটে কম আসছেন। ৫০ থেকে এক লাখ টাকার গরুর চাহিদা বেশি। এক্ষেত্রে ছাগলের চাহিদা ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে। তবে, ঈদের আগের হাটগুলোতে দাম বাড়বে বলে প্রত্যাশা তাদের।’
প্রথম দিকে সাশ্রয়ী দামে কোরবানি যোগ্য পশু কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা। গরু ক্রেতা হোসেন আলী বলেন, আমি এক লাখ ২০ হাজার টাকায় গরু কিনেছি। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি দিতে চাই। একটু আগে গরুটি কিনে লালনপালন করছি।
জিন্নাত তালুকদার বলেন, ১২ হাজার টাকায় একটি ছাগল কিনেছি। গতবারের চেয়ে একটু কম মূল্যে ছাগলটি কিনেছি। এমন সাশ্রয়ী মূল্য থাকলে সবার জন্য ভালো হবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার সিদ্দীকুর রহমান বলেন, ‘নড়াইলের খামারসহ গৃহস্থালি বাড়িতে যেসব গরু লালনপালন করা হয়েছে, তা স্বাভাবিক খাবারের মাধ্যমে বড় করা হয়েছে। তারপরও গরু মোটাতাজাকরণে ক্ষতিকর কিছু ব্যবহার করা হয়েছে কিনা, সেজন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষায় হাটগুলোতে ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম রয়েছে। নড়াইল জেলা ছোট হলেও এখানকার গরুর মান অনেক ভালো। এছাড়া পাশের দেশ থেকে গরু অবৈধভাবে প্রবেশ বন্ধে সংশ্লিষ্টরা কঠোর নজরদারি রাখছেন।’
পুলিশ সুপার কাজী এহসানুল কবীর জানান, ‘জাল টাকা রোধসহ ক্রেতা-বিক্রেতার সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশ প্রশাসন তৎপর রয়েছে। সড়ক এবং হাটগুলোতে সব সময় নজরদারি রাখা হচ্ছে। আশা করছি, ঈদুল ফিতরের মতো ঈদুল আজহাও সুষ্ঠু-সুন্দরভাবে সবাই উদ্যাপন করতে পারবেন।’