চট্টগ্রামে খোলা নালায় তলিয়ে শিশু নিখোঁজ, ১৪ ঘণ্টা ব্যর্থ উদ্ধার অভিযান

শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ১৪ ঘণ্টা পার হলেও শিশুটির কোনো সন্ধান মেলেনি।

ওমর ফারুক, চট্টগ্রাম ব‍্যুরো

Location :

Chattogram
খোলা নালায় তলিয়ে শিশু নিখোঁজ
খোলা নালায় তলিয়ে শিশু নিখোঁজ |নয়া দিগন্ত

চট্টগ্রাম নগরের চকবাজারে খোলা নালায় পড়ে সেহলিজ নামে ছয় মাস বয়সী এক শিশু নিখোঁজ হয়েছে।

আজ শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ১৪ ঘণ্টা পার হলেও শিশুটির কোনো সন্ধান মেলেনি। ফায়ার সার্ভিস, সিভিল ডিফেন্স এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেও শিশুটিকে উদ্ধার করতে পারেননি।

এর আগে, শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

সেহলিজের মা সালমা বেগম জানান, তারা কাপাসগোলায় এক আত্মীয়ের বাসা থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে ফিরছিলেন। নবাব হোটেলের পাশে অটোরিকশাটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নালায় পড়ে যায়। সালমা বেগম এবং অটোরিকশার চালকসহ অন্য যাত্রীকে স্থানীয়রা উদ্ধার করলেও সেহলিজকে উদ্ধার করা যায়নি।

তিনি জানান, তাকে উদ্ধার করা হলেও তার কোলে থাকা শিশুটি নালায় পড়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ চলার কারণে নালার পাশের নিরাপত্তাবেষ্টনী খোলা ছিল। যার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরই ফায়ার সার্ভিসের চন্দনপুরা ইউনিটের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। তাদের সাথে কাজ করেছে সিভিল ডিফেন্স ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। আজ (শনিবার) সকাল ৯টা থেকে তারা পুনরায় উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছে।

গেল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তিনি উদ্ধার অভিযানের নির্দেশনা দেন।

মেয়র বলেন, শিশুটিকে উদ্ধারই এখন প্রধান কাজ। ফায়ার সার্ভিস, ডুবুরি দল ও চসিকের পরিচ্ছন্নকর্মীরা এ কাজে নিয়োজিত আছেন।

তিনি আরো জানান, রিকশাযাত্রী মায়ের কোল থেকে ছয় মাসের শিশু নালায় ছিটকে পড়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। তখন পানিতে প্রবল স্রোত ছিল।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে খোলা নালায় পড়ে এর আগেও বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট মুরাদপুর মোড়ে একইভাবে নালায় পড়ে নিখোঁজ হন সবজি বিক্রেতা সালেহ আহমেদ। দীর্ঘ উদ্ধার অভিযানের পরও তার লাশ পাওয়া যায়নি। একই বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর, আগ্রাবাদ এলাকায় নালায় পড়ে মারা যান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী সেহেরীন মাহবুব সাদিয়া। ২০২২ সালে ষোলশহর এলাকায় শিশু কামাল নালায় পড়ে নিখোঁজ হয় এবং তিন দিন পর মুরাদপুর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। গত বছর আগ্রাবাদের রঙ্গীপাড়া এলাকায় দেড় বছর বয়সী শিশু ইয়াছিন আরাফাত নালায় পড়ে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ১৬ ঘণ্টা পর তার লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। চলতি বছরের জুনে গোসাইলডাঙ্গা এলাকায় সাত বছরের শিশু সাইদুল ইসলাম নালায় পড়ে নিখোঁজ হয় এবং পরদিন নাছির খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।