মানবাধিকার কমিশনকে স্বাধীন করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার

মানবাধিকার কমিশন আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৫৩ নং আইন) রহিত করে নতুনভাবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ ২০২৫ প্রণয়নের ড্রাফট নিয়ে কাজ করছে সরকার।

গোলাম আজম খান, কক্সবাজার অফিস

Location :

Cox's Bazar
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল |সংগৃহীত

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার মানবাধিকার রক্ষায় একটি মাইলফলক স্থাপন করে যেতে চায় এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের লক্ষ্যে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

আজ শনিবার দুপুরে কক্সবাজারের বেওয়াচ হোটেলে আয়োজিত জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ ২০২৫ বিষয়ক পরামর্শক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মানবাধিকার রক্ষা তো দূরের কথা, বরং মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হতো। আইনেও ছিল নানা সীমাবদ্ধতা। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতায় আমরা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো।’

সভায় তিনি আরো বলেন, ‘বিগত সরকারের সময় মানবাধিকার কমিশন মানবাধিকার রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা না রেখে বরং সরকারের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছিল। বর্তমান সরকার কমিশনকে এমনভাবে সংস্কার করতে চায় যাতে গুম, খুনসহ যেকোনো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা স্বাধীনভাবে তদন্ত করা সম্ভব হয়।’

এদিকে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্প ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘দীর্ঘ ১৫ বছরের গুম, খুন ও আয়না ঘরের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ ২০২৫ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিগত সময়ে মানবাধিকার কর্মীদের গুম করে নির্যাতন করা হতো।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার কমিশনকে এমনভাবে রূপান্তর করতে চায় যাতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো স্বাধীনভাবে তদন্ত করা যায়।’

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের বিশেষ পরামর্শক ব্যারিস্টার তানিম হোসেইন শাওন। বক্তব্য রাখেন ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফেন লিলার, বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেটু সিগফ্রিড রেংগলি, গুম কমিশনের প্রধান বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।

সভায় জানানো হয়, মানবাধিকার কমিশন আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ৫৩ নং আইন) রহিত করে নতুনভাবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ ২০২৫ প্রণয়নের ড্রাফট নিয়ে কাজ করছে সরকার।

প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে কমিশনকে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও চাকরিজীবীদের বিরুদ্ধেও স্বাধীনভাবে পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। গুম ও খুন প্রতিরোধে আলাদা আইন প্রণয়নের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাবলে অধ্যাদেশ প্রণীত হলে বর্তমান সরকারের আমলেই তা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু হবে।