নীলফামারীর সৈয়দপুরে এক শিক্ষিকার বাড়ি থেকে গৃহপরিচারিকা এক বৃদ্ধার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় ওই লাশের মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত পাওয়া যায়। তবে বাড়িতে ডাকাতি করে ওই বৃদ্ধাকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যান বলে জানিয়েছেন ওই শিক্ষিকা।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলা শহরের নয়াটোলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শামসুন্নাহার বেগম(৭৫) দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার দেবীগঞ্জ এলাকার ডাঙারহাট ফকিরপাড়ার মরহুম আজাহার আলীর স্ত্রী।
সৈয়দপুর তুলশীরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রহিলা বেগমের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা ওই বৃদ্ধা তার দূর সম্পর্কীয় বোন ও গৃহপরিচারিকা বলে জানা গেছে।
শিক্ষিকা রহিলা বেগম জানান, দীর্ঘদিন ধরে তিনি আমার বাসায় থাকেন। প্রতিদিনের মতো সকালে আমি স্কুলে যাই। আপা (নিহত বৃদ্ধা) একাই বাসায় ছিলেন। পরে দুপুরে টিফিনের সময় বাসায় এসে দরজায় নক করলে কোনো সাড়া না পেয়ে পাশের বাসার লোকজন ডেকে নিয়ে আসি। এদিকে দরজা বাইরে থেকে সিটকিনি লাগানো ছিল। পরে আমরা দরজা খুলে ঘরে ঢুকে মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে পড়ে থাকতে দেখি। তার মাথায় বড় ধরনের জখম ছিল। জানি না কীভাবে এমন হলো? কে বা কারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটাল?
ওই শিক্ষিকা আরো জানান, ঘরের সব আসবাবপত্র তছনছ করে রাখা ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, চুরিকালে দেখে ফেলায় তাকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনায় ওই বাসা থেকে নগদ ৪৫ হাজার টাকা, দুই ভরি স্বর্ণালংকার ও একটা এলইডি টিভি খোয়া গেছে বলে দাবি করেছেন শিক্ষিকা রহিলা বেগম।
নিহতের ছেলে সামসুল বলেন, ‘বেলা ১১টার দিকে মায়ের সাথে মোবাইলফোনে কথা হয়েছে। এ সময় তিনি শরীর ভালো নয় বলে জানান। তখন তাকে বাড়িতে চলে আসতে বললে আগামী রোববার বাড়িতে আসবেন বলে জানান। কিন্তু দুপুর ৩টার দিকে মোবাইলে জানানো হয় মা মারা গেছে। তাড়াতাড়ি এসে দেখি মাকে হত্যা করা হয়েছে। এখনো লাশ দেখতে দেয়নি পুলিশ।
সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফইম উদ্দিন বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে লাশসহ বাসাটি আমাদের জিম্মায় নিয়েছি। রংপুর থেকে ক্রাইম সিন টিম আসছে। তারা আসার পর সরেজমিন সুরতহাল তদন্ত করে লাশ থানায় নেয়া হবে। আইনিপ্রক্রিয়া শেষে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নীলফামারীর মর্গে পাঠানো হবে।
এদিকে ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শত শত মানুষ ভিড় জমিয়েছেন ঘটনাস্থলে।