বরগুনার তালতলী উপজেলার কাজীর খাল গ্রামের চাঞ্চল্যকর আমির হোসেন খাঁ হত্যা মামলার দীর্ঘ প্রায় নয় মাস পর এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২১ জুন) তাকে গ্রেফতার ওসমান মৃধাকে (৪০) আমতলী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এর আগে, শুক্রবার (২০ জুন) সন্ধ্যায় কাজীরখাল গ্রামের চৌরাস্তা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার বিবরণ ও বাদিপক্ষের অভিযোগে জানা যায়, কাজীরখাল গ্রামের মো: আমির হোসেন খাঁর সাথে একই গ্রামের সেকান্দার ঘরামি (৪৫) ও মৃধা গোষ্ঠীর মধ্যে নির্বাচন ও জমি-জমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় আমির হোসেন পার্শ্ববর্তী গোলেনুরের বাড়িতে পাওনা টাকা চাইতে গেলে সেকান্দার ঘরামি, ওসমান মৃধা ও তাদের সহযোগীরা দেশী অস্ত্র, রামদা, লোহার রড ও লাঠিসোটা নিয়ে তার ওপর হামলা চালায়। আমির খাঁর চিৎকারে তার স্ত্রী, মেয়ে ও ফুফাতো ভাই ইউসুফসহ স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা তাদেরও মারধর করে। আমির খাঁর স্ত্রীকে রামদা দিয়ে মাথায় কোপ দেয়া হয়। গুরুতর আহতদের প্রথমে তালতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যালে পাঠানো হয়। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, সেখানে ২৪ অক্টোবর দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমির হোসেনের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহতের ছেলে আবু বকর সিদ্দিক খান তালতলী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় মামলা তুলে নিতে বারবার হুমকি দিচ্ছে। আবু বকর বলেন, ‘আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তালতলী থানায় জিডি করতে গেলে এসআই সুশান্ত বিশ্বাস জিডি করতে নিষেধ করেন।’
মামলার তদন্তভার পাওয়া এসআই সুশান্ত বিশ্বাস সম্প্রতি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘খুব শিগগিরই আসামিদের গ্রেফতার করা হবে।’
এদিকে মামলার অন্যতম সাক্ষী ও নিহতের ফুফাত ভাই ইউসুফ বলেন, ‘ঘটনার দিন আমির খাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আমিও হামলার শিকার হই। এখন আসামিদের ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পারি না।’
ঘটনার পর র্যাব বাদিপক্ষের তথ্যের ভিত্তিতে চার আসামিকে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করে।
এ বিষয় তালতলী থানার এসআই সুশান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘আসামি ওসমান মৃধাকে গ্রেফতার করে আমতলী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
তার বিরুদ্ধে বাদিপক্ষের দেয়া অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।