এক সময় ছিলো কয়েক বিঘা ফসলি জমি ও বসতভিটা। নদী ভাঙনে সেই সব কিছু হারিয়ে হয়েছেন নিঃস্ব। এরপর নদীর পাড়ের সরকারি জমিতে ছোট একটি টিনের ঘর তুলে কোনো রকমে বসবাস করছেন তিনি। এমন পরিস্থিতির মধ্যে আছেন মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার সাহেবরামপুর এলাকার নতুন আন্ডারচর লঞ্চঘাট এলাকার ৭০ বছর বয়সী চাঁনমিয়া।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে নদীর পাড়ে বসে অপলক দৃষ্টিতে কি যেন দেখছিলেন তিনি। একটু এগিয়ে গিয়ে কথা হলো তার সাথে। কি দেখছিলেন তিনি? জানতে চাইলে বলেন, ‘ওই যে নদীর ওপার দেখতেছেন না? ওই পাড়ে আমাগো বাড়িঘর সব আছিলো, এখন আর কিছুই নাই। আমার এই জীবনে তিনবার আমাগো বাড়িঘর নদীর পেটে গেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘জায়গা-জমি যা ছিলো, সব শেষ। কতো যে না খাইয়া থাকছি হিসাব নাই। জাগো নদীতে সব লইয়া যায়, তাগো তো আর কোনো অস্তিত্ব থাহে না।’
চাঁনমিয়ার মতো একই অবস্থা প্রতিবেশী বৃদ্ধ বজলু সরদারের,৭৫ বছর বয়সে সাতবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছেন তিনি। এখন তার কিছুই নেই। সরকার থেকে পাননি কোনো আর্থিক সুবিধাও।
তিনি বলেন, ‘একবার হুনছি সরকার নাকি আমাগো একখান ঘর দিবো, কই তা–ও আহে না। না দিলো কোনো ঘর, না দিলো কোনো খাওন। এক পোলায় বদলা দেয়, তাই দিয়া আমাগো সংসার টিক্কা আছে।’
মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিন সূত্রে জানা যায়, উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল সাহেবরামপুর এলাকার নতুন আন্ডারচর লঞ্চঘাট ও উত্তর আন্ডারচর গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে গেছে আড়িয়াল খাঁ নদ। বছরের পর বছর আড়িয়াল খাঁর তান্ডবে বিলিন হয়ে গেছে হাজারো বাড়িঘর। এ বছর নতুন করে আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙনে নদী গর্ভে চলে গেছে প্রায় দুই শতাধিক বসতঘর।
এছাড়াও একটি গ্রামীণ সড়কের ৫০০ মিটার অংশ নদের ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। নতুন করে ভাঙনের আতঙ্কে রয়েছে লঞ্চঘাট এলাকার আশেপাশের মানুষ।