ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের (মসিক) ৩৩ জন কর্মকর্তাকে চলতি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে আগের পদে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। টেন্ডার আহ্বান, প্রকল্প অনুমোদন ও নথিপত্রে স্বাক্ষরের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
গত ১১ আগস্ট মসিকের প্রশাসক মো: মোখতার আহমেদের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে চলতি দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা নিজ নিজ মূল পদে ফিরে যাবেন।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই পদক্ষেপ সরকারি বিধিমালা অনুসারে নেয়া হয়েছে।
প্রকৌশল, হিসাবরক্ষণ, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশনসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা চলতি দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু তাদের সরিয়ে দেয়ায় প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি থমকে গেছে।
চলতি দায়িত্বে থাকা প্রধান প্রকৌশলী মো: রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, ‘আমি এখন নির্বাহী প্রকৌশলী পদে ফিরে গেছি। অথচ আমি বেশ কয়েকটি প্রকল্পের পরিচালক ছিলাম। এখন টেন্ডার আহ্বানও করতে পারছি না। উন্নয়ন কার্যক্রম স্থবির হয়ে গেছে।’
সহকারী সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মুহা: আমিনুল ইসলাম জানান, আমরা জনস্বার্থে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছিলাম। এই সিদ্ধান্তে প্রতিদিন শত শত ফাইল আটকে যাচ্ছে, প্রশাসনিক প্রক্রিয়া ভেঙে পড়েছে।
সিটি করপোরেশনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, প্রশাসক কার্যালয়, প্রকৌশল বিভাগ, হিসাবরক্ষণ বিভাগ, স্যানিটেশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে এখন অভিজ্ঞ কর্মকর্তা নেই। নতুন কেউ দায়িত্ব না নেয়ায় কাজ কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।
একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, চিফ অ্যাকাউন্টস অফিসার, প্রধান প্রকৌশলী, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা, স্যানিটেশন কর্মকর্তা-এই গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো এখন শূন্য। ফলে উন্নয়ন প্রকল্পের বিল পাশ, ঠিকাদারদের অর্থ ছাড়, ফাইল মুভমেন্ট সবই বন্ধ।
চলমান সড়ক উন্নয়ন, ড্রেনেজ সংস্কার, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রকল্প থেমে যাওয়ায় নগরবাসীর ভোগান্তির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বর্ষায় ড্রেন পরিষ্কার ও বর্জ্য অপসারণে সমস্যা হলে জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি দেখা দিতে পারে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মসিক সচিব সুমনা আল মজিদ বলেন, ‘এই পরিবর্তনের কারণে কিছু সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু বিধিমালা অনুযায়ী পদোন্নতি কমিটির অনুমোদন ছাড়া দীর্ঘমেয়াদে চলতি দায়িত্ব দেয়া সম্ভব নয়। অর্গানোগ্রাম চূড়ান্ত হলে প্রয়োজনীয় পদোন্নতি দেয়া হবে।’
প্রশাসক মো: মোখতার আহমেদ জানান, যারা দায়িত্ব পালন করছেন তারা যেন কাজে বিঘ্ন না ঘটান। প্রয়োজনে আমরা বিকল্প ব্যবস্থা নেব।