চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ঘোষিত বর্ধিত ট্যারিফ আগামী ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্টের একটি দ্বৈতবেঞ্চ।
রোববার বাংলাদেশ মেরিটাইম ল সোসাইটিজের (বিএমএলএস) একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দীকার দ্বৈত বেঞ্চ এই স্থগিতাদেশ দেন।
রিট আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবি মহিউদ্দিন আবদুল কাদের জানিয়েছেন, বর্ধিত ট্যারিফের এসআরও-টির কার্যকারিতা মহামান্য হাইকোর্ট ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন এবং একইসাথে বিবাদি নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের প্রতি কেন এসআরও-টি আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূতভাবে ইস্যু করা হয়েছে ঘোষণা করা হবে না মর্মে রুল ইস্যু করেছেন।
ইতোমধ্যে হাইকোর্টের আদেশের ল’ ইয়ার্স সার্টিফিকেট চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ট্যারিফ ও পোর্ট চার্জেসের বিষয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার উপস্থিতিতে বন্দরের বোর্ড রুমে বন্দর ব্যবহারকারীদের নিয়ে এক সভা আহ্বান করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ অক্টোবর দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে অ্যারাইভাল টাইম বিবেচনা করে চট্টগ্রাম বন্দরে আসা সকল জাহাজের ভেসেল বিল, কনটেইনার ও কার্গো বিল নবপ্রবর্তিত ট্যারিফ রেইট অনুযায়ী আদায়যোগ্য বিবেচনা করা হচ্ছে। একইভাবে সিঅ্যান্ডএফ প্রতিনিধিসহ সব বন্দর ব্যবহারকারী নতুন হারে বন্দরের মাশুল পরিশোধ করছেন।
এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বন্দরের বিভিন্ন সেবাখাতে সর্বোচ্চ ৪১ শতাংশ পর্যন্ত মাশুল বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট পক্ষের আপত্তির মুখে নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা ২০ সেপ্টেম্বর তা এক মাসের জন্য স্থগিত রাখেন।
বন্দরে বর্তমানে ৫২টি খাতে মাশুল আদায় হয়। এর মধ্যে ২৩টি খাতে সরাসরি নতুন হারে ট্যারিফ কার্যকর করা হচ্ছে। গেজেট অনুযায়ী- ভাড়া, টোল, ফি ও মাশুল ডলারের বিনিময়মূল্যের ভিত্তিতে আদায় করা হবে। প্রতিডলারের হার ধরা হয়েছে ১২২ টাকা। হার বাড়লে মাশুলও স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাড়বে।
সবচেয়ে বেশি মাশুল বৃদ্ধি হয়েছে কনটেইনার পরিবহন খাতে। প্রতি ২০ ফুট কনটেইনারে মাশুল ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ২৪৩ টাকা, যা আগে ছিল ১১ হাজার ৮৪৯ টাকা। এতে গড়ে প্রায় ৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে। আমদানি কনটেইনারে ৫ হাজার ৭২০ টাকা এবং রফতানি কনটেইনারে ৩ হাজার ৪৫ টাকা বেশি দিতে হবে। এছাড়া প্রতিটি কনটেইনার ওঠানামার ক্ষেত্রেও প্রায় ৩ হাজার টাকা বাড়তি খরচ যুক্ত হবে। ফলে সামগ্রিকভাবে কনটেইনার পরিবহনে ২৫ থেকে ৪১ শতাংশ পর্যন্ত মাশুল বেড়েছে।



