নাটোরের বড়াইগ্রামে মোবাইলে গেম খেলা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ১২ বছর বয়সী এক শিশুর হাতে মিনহাজ হোসেন আবির (৯) নামে আরেক শিশু খুন হয়েছে।
শুক্রবার (২৭ জুন) সকালে হযরত আলীকে (১২) গ্রেফতার করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে প্রেস ব্রিফিংয়ে বড়াইগ্রাম সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শোভন চন্দ্র হোড় এ হত্যার রহস্য উদঘাটনের তথ্য জানান।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বনপাড়া পাটোয়ারী ফিলিং স্টেশনের কাছে নির্মাণাধীন মসলা মিলের ফাঁকা মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আবির উপজেলার মহিষভাঙ্গা মহল্লার কাতার প্রবাসী মিলন হোসেনের ছেলে। সে বনপাড়া আদিব ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল। অভিযুক্ত হযরত আলী একই গ্রামের রিয়াজুল ইসলামের ছেলে। সে মহিষভাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণি ছাত্র বলে জানা গেছে।
নিহত আবির স্বজনরা জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে আবির তার বাবার ব্যবহৃত স্মার্টফোন ও তার বাইসাইকেলটি নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। সন্ধ্যায় তার বাবা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে রাতে স্বজনরা পাশের মসলা মিলের ফাঁকা মাঠে তার রক্তমাখা সাইকেল ও স্যান্ডেলসহ আবিরের মাথা থেতলানো লাশ দেখতে পান।
থানা ও প্রেস ব্রিফিং সূত্রে জানা গেছে, বিকেলে আবির ও হযরত একসাথে বসে মোবাইলে গেম খেলছিল। এ সময় খেলা নিয়ে দ্বন্দ্বে তাদের মধ্যে মারামারি হয়। একপর্যায়ে সাইকেল ফেলে রেখে কিছুদূর গেলে হযরত আলী পাশে পড়ে থাকা ইট দিয়ে আবিরের মাথায় আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে হযরত তাকে পাশেই ভ্ট্টুার শুকনা গাছের পালার নীচে লুকিয়ে রেখে মোবাইলটি নিয়ে চলে যায়। শুক্রবার সকালে পুলিশ হযরতকে গ্রেফতার করলে সে প্রাথমিক স্বীকারোক্তিতে এসব তথ্য জানায়। পরে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী ওই বাড়ি থেকে আবিরের মোবাইলটি জব্দ করা হয়।
আবিরের বাবা মিলন হোসেন জানান, ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসার পর থেকে ছেলেটা বেশিরভাগ সময় আমার সাথেই থাকতো। গতকাল মোবাইল ও সাইকেল নিয়ে সে ঘুরতে যায়। আমি বাড়িতে থেকেও আমার ছেলের খেয়াল রাখতে পারি নাই।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারওয়ার হোসেন জানান, ‘দ্রুততম সময়ের মধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেফতার ও হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। শুক্রবার ওই শিশুকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া নিহতের লাশের শুক্রবার ময়নাতদন্ত করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’