বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, আমরা কোনো দল বা কারো বিরূদ্ধে নই, কিন্তু যারা দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আমরা চাই- উদারতার রাজনীতি, সহনশীলতার রাজনীতি, মানুষের কল্যাণের রাজনীতি। এজন্য আগামী দিনে সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাবিক আমাদের প্রয়োজন। যারা দেশকে সততার সাথে, দক্ষতার সাথে, দেশকে ভালোবেসে দুর্নীতিমুক্ত একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবে। দেশের সকল ছাত্র-জনতা এমন নেতার পাশে দাঁড়াবে ইনশাআল্লাহ।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দিনাজপুর ইন্সটিটিউট মাঠে দিনাজপুর-৩ উন্নয়ন ফোরাম আয়োজনে ছাত্র-যুব-নাগরিক সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিবির সভাপতি আরো বলেন, ১৯৭১ সালে যে স্বপ্ন নিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিল, তারপরই যে দল নিজেদেরকে স্বাধীনতার কর্তৃত্ববাদী মনে করে- সে দলের হাতেই বাংলাদেশের সকল দলকে নিষিদ্ধ করে বাকশাল কয়েম হয়। তারা রক্ষীবাহিনী গঠন করে তাদের বিরোধীতাকারী এবং দেশের পক্ষে কথা বলা লোকদের হত্যা করেছিল। তারা লুটপাট করে আমাদের সমৃদ্ধ বাংলাদেশটাকে এমন পর্যায়ে পাঠিয়েছিলো যে, ১৯৭৪ সালে দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে দেশ। সেই দলটিই গত ১৫ বছর ধরে দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যা করে, লাশের ওপর পৈশাচিক কায়দায় নৃত্য করেছিল। ক্ষমতায় এসে পিলখানা ট্রাজেডির নামে আমাদের দেশের চৌকস সেনা অফিসারদের হত্যা করেছিল। শাপলা চত্বরে রাতের অন্ধকারে ইবাদতরত আলেম-ওলামা, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের নির্মমভাবে হত্যা করেছিল।
তিনি বলেন, যারা এই সরকারের বিরোধিতা করতো, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতো, তাদেরকে গুম-খুন-আয়নাঘরে নিয়ে নানানভাবে রিমান্ডের নামে চরম নির্যাতন করছিল। এ অবস্থা যখন চলছিল তখন ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনে বৈষম্য-দুর্নীতি ও ফ্যাসিবাদের বিরূদ্ধে একসাথে জেগে উঠেছিল দেশের ছাত্র-জনতা। সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় খুনী হাসিনার পতন হয়। খুনী হাসিনা পালিয়ে ভারতে যেতে বাধ্য হয়। তাই এখনো আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। জাতি ঐক্যবদ্ধ থাকলে আর কোনোদিন কোনো ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিতে পারবে না।
সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন দিনাজপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যক্ষ আনিসুর রহমান, প্রধান মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর-৩ (সদর) আসনের জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী অ্যাডভোকেট মাঈনুল আলম, বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ রাকসু ভিপি ও রাবি শিবির সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ।
দিনাজপুর সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মেহরাব আলীর সভাপতিত্বে এবং দিনাজপুর শহর জামায়াতের আমির সিরাজুস সালেহীন ও সেক্রেটারি কামরুল হাসান রাসেলের সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী জামায়াত নেতা মাওলানা মুজিবুর রহমান, সদর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ও সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মাওলানা নুরুল্লাহ সরকার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দিনাজপুর জেলার (উত্তর) সেক্রেটারি মুফতি খায়রুজ্জামান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস দিনাজপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা জোবায়ের সাঈদ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের দিনাজপুর জেলা সভাপতি মাওলানা রেজাউল করিম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি জাগপার জেলা সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ইমরুল কায়েস রূপম, দিনাজপুর শহর ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও দিনাজপুর শহর সভাপতি মুশফিকুর রহমান, সেক্রেটারি মাসুদ রানা প্রমুখ।



