ফুলবাড়ীতে তীব্র তাপদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন

‘ফুলবাড়ীসহ কুড়িগ্রাম জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আজ শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।’

Location :

Phulbari
ফুলবাড়ীতে তীব্র তাপদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন
ফুলবাড়ীতে তীব্র তাপদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন |নয়া দিগন্ত

জাকারিয়া শেখ, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতা

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় টানা এক সপ্তাহ ধরে চলছে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ। সূর্যের তীব্র তাপে জনজীবন যেমন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে, তেমনি হাঁসফাঁস করছে পশুপাখিও। প্রতিদিন দুপুরের পর তাপমাত্রা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, সৃষ্টি হয়েছে চরম ভোগান্তি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোদের প্রখরতা যেন দাহ্য আগুন ছড়াচ্ছে।

তাপমাত্রার এমন চরম ঊর্ধ্বগতি জনজীবনকে নাজেহাল করে তুলেছে। অনেক এলাকায় পিচঢালা সড়কের ওপর দিয়ে হাঁটা দায় হয়ে পড়েছে। মাঠে-ঘাটে কাজ করা দিনমজুর ও কৃষি শ্রমিকদের জন্য পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে একেবারে দুর্বিষহ।

খড়িবাড়ি বাজার এলাকার ভ্যানচালক আশরাফুল আলম বলেন, ‘কয়েক দিন ধইরা যে গরম পড়তেছে, রাস্তায় ভ্যান চালাইতে পারতেছি না। পাকা রাস্তায় চাকা পাংচার হইয়া যাইতেছে। মানুষও রাস্তায় কম বের হয়, যাত্রী কম, ভাড়াও কমে গেছে। এই রকম গরম থাকলে কাম-কাজ করা কঠিন হইয়া যাইবো। কাম না করলেই বা সংসার চলবো কেমনে?’

তীব্র গরমে শুধু মানুষ নয়, পশুপাখিরাও দিশেহারা হয়ে পড়েছে। স্বস্তির খোঁজে প্রাণীদের অনেককেই পুকুরের পানিতে শুয়ে থাকতে কিংবা নোংরা পানি পান করতেও দেখা গেছে। অনেকে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে, কেউ কেউ নদীর পাড়ে গা ভিজিয়ে খানিকটা আরাম খোঁজার চেষ্টা করছে।

স্থানীয় বিভিন্ন বাজার ও হাট ঘুরে দেখা গেছে, দুপুরের পর ক্রেতাসমাগম প্রায় নেই বললেই চলে। রোদের তীব্রতা ও গরমের কারণে শিশুরা ঘর থেকে বের হচ্ছে না। সড়কে যান চলাচলও অনেকটা কমে গেছে। রিকশাচালক, ভ্যানচালক ও দিনমজুরদের কষ্ট সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ছে।

রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র জানান, ‘ফুলবাড়ীসহ কুড়িগ্রাম জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আজ শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই অবস্থা আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।’

তবে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সাময়িক স্বস্তির ইঙ্গিত থাকলেও, আপাতত এই দাবদাহ সাধারণ মানুষের কষ্টকে যেন আরো বাড়িয়ে তুলেছে।