‘তুলা উন্নয়ন বোর্ডের’ পরিত্যক্ত ভবনে জামায়াতের সাইনবোর্ড, যা বললেন আঞ্চলিক কর্মকর্তা

‘উল্লাপাড়ায় আমাদের নিজস্ব কোনো অফিস ছিল না। এক সময় ভাড়া বাসায় কার্যক্রম চলেছে, তবে তুলা উৎপাদন না থাকায় বহু আগেই সেই কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে। পরিত্যক্ত ভবনের সাথে আমাদের কোনো সংযোগ নেই।’

মো: জাকিরুল হাসান, উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ)

Location :

Ullahpara
উল্লাপাড়ায় পরিত্যক্ত ভবনে জামায়াতের সাইনবোর্ড, যা বললেন উপজেলা কর্মকর্তা
উল্লাপাড়ায় পরিত্যক্ত ভবনে জামায়াতের সাইনবোর্ড, যা বললেন উপজেলা কর্মকর্তা |নয়া দিগন্ত

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার একটি পুরাতন, পরিত্যক্ত ভবনে জামায়াতে ইসলামীর সাইনবোর্ড টাঙানো এবং কার্যক্রম চালানোর ঘটনাকে ঘিরে সম্প্রতি স্থানীয়ভাবে নানা বিতর্ক এবং গুজব ছড়িয়েছে। একদল বলছে, এটি তুলা উন্নয়ন বোর্ডের পুরনো অফিস ভবন, যেটি জামায়াত ইসলামীর কর্মীরা দখল করে নিয়েছে। অন্যদিকে, জামায়াতের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, এটি বহু বছর ধরে পরিত্যক্ত একটি ভবন, যার কোনো প্রমাণিত মালিকানা নেই এবং এটি তারা শুধু অস্থায়ীভাবে ব্যবহার করছে—দখলের কোনো প্রশ্নই ওঠে না।

উল্লাপাড়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের পাশেই অবস্থিত ভবনটি সম্পর্কে মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকালে সরেজমিনে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হচ্ছিল না। কেউ আসতো না এবং সাধারণত খড়, লাকড়ি বা অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখার স্থান হিসেবে ব্যবহার হতো।

একজন বাসিন্দা জানান, ‘কিছুদিন আগে দেখি কয়েকজন ছেলে এসে ঘরটা পরিষ্কার করছে। এরপর সেখানে একটা ব্যানার টাঙায়। মাঝে মাঝে বসছে, কিন্তু কোনো বিশৃঙ্খলা চোখে পড়েনি।’

উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক শাহজাহান আলী বলেন, ‘এটি একটি পরিত্যক্ত ভবন। আমরা বহুদিন ধরেই জানি এখানে কোনো অফিস চালু ছিল না। তুলা উন্নয়ন বোর্ডের অফিস এটি নয়। আমাদের ছেলেরা এটি পরিষ্কার করে মাঝে মাঝে বৈঠক করে। যারা গুজব ছড়াচ্ছে তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি নিজে উল্লাপাড়া কামিল মাদ্রাসার ছাত্র ছিলাম। সেই সময়েও এখানে কোনো তুলা উন্নয়ন অফিস দেখিনি। কারো সম্পত্তি দখলের প্রশ্নই আসে না। প্রশাসন চাইলে মালিকানা খতিয়ে দেখতে পারে।’

তুলা উন্নয়ন বোর্ডের বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, ‘উল্লাপাড়ায় আমাদের নিজস্ব কোনো অফিস ছিল না। এক সময় ভাড়া বাসায় কার্যক্রম চলেছে, তবে তুলা উৎপাদন না থাকায় বহু আগেই সেই কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে। পরিত্যক্ত ভবনের সাথে আমাদের কোনো সংযোগ নেই।’

উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) শারমিন আক্তার রিমা বলেন, ‘আমি লোক পাঠিয়েছি এবং যাচাই-বাছাই করছি। জমির প্রকৃত মালিকানা উদ্ঘাটনের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত বলেন, ‘তুলা উন্নয়ন বোর্ডের অফিস ছিল কি না এবং জমির মালিক কে—এই দুটি বিষয়ে সহকারী কমিশনার(ভূমি) কে নির্দেশ দিয়েছি, তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’