প্রাণের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন স্বজনরা

মুরাদনগরে মা, ছেলে ও মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা, ঘটনার ৩৫ ঘণ্টা পরও হয়নি মামলা

নিহত রোকসানা আক্তার রুবির বিরুদ্ধে মুরাদনগর, বাঙ্গারা বাজার, নবীনগর, ময়মনসিংহ, ত্রিশাল থানায় ১৬টি, ছেলে রাসেলের নামে নয়টি ও জোনাকির নামে পাঁচটি মামলা রয়েছে। আহত রুমার নামে দুইটি মামলা রয়েছে।

নাজিম উদ্দিন, মুরাদনগর (কুমিল্লা)

Location :

Muradnagar
মুরাদনগরে মা, ছেলে ও মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা, ঘটনার ৩৫ ঘণ্টা পরও হয়নি মামলা
মুরাদনগরে মা, ছেলে ও মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা, ঘটনার ৩৫ ঘণ্টা পরও হয়নি মামলা |নয়া দিগন্ত

কুমিল্লার মুরাদনগরে মা ও তার দুই সন্তানকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার পর প্রাণের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন পরিবারের অন্য স্বজনরা। এ ঘটনার ৩৫ ঘণ্টা পরও থানায় কোনো মামলা হয়নি।

পুলিশ বলছে, পরিবারের লোকজনকে ঘটনার পর থেকে খোঁজা হচ্ছে। শুক্রবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যার মধ্যে হয়তো পরিবারের লোকজন থানায় মামলা করবেন। কেউ না এলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে। এসব তথ্য জানান বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মাহফুজুর রহমান।

এদিকে কুমেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে তিনজনের লাশের ময়নাতদন্ত শুরু হয়েছে। কাজ শেষ হলে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার কড়ইবাড়ী গ্রামে এলাকাবাসী একটি মোবাইল ছিনতাই ও মাদক ব্যবসার অভিযোগ তুলে মা ও তার দুই সন্তানকে পিটিয়ে হত্যা করে।

নিহতরা হলেন, গ্রামের জুয়েল মিয়ার স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুবি(৫৫), তার ছেলে মো: রাসেল(৩৮) ও মেয়ে জোনাকি আক্তার(৩২)।

হামলায় আহত হয়েছেন- রুবির আরেক মেয়ে রুমা আক্তার(২৫)। তাকে সঙ্ককাটাপন্ন অবস্থায় কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (কুমেক) ভর্তি করা হয়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সময় নিহত রাসেলের স্ত্রী ও মেয়ে জোনাকির স্বামী মনির হোসেন জানের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এলাকায় তাদের সচারাচর দেখা যাচ্ছে না। তারা আত্মগোপনে রয়েছেন। এদিকে রুমা আক্তার গুরুতর আহত হয়ে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিহত রোকসানা আক্তার রুবির দ্বিতীয় স্বামী জুয়েল মিয়াও পালাতক।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত তিনজনের লাশ এখনো কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। কোনো আত্মীয় স্বজনরা লাশগুলো গ্রহণ করছে না।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত রোকসানা আক্তার রুবির বিরুদ্ধে মুরাদনগর, বাঙ্গারা বাজার, নবীনগর, ময়মনসিংহ, ত্রিশাল থানায় ১৬টি, ছেলে রাসেলের নামে নয়টি ও জোনাকির নামে পাঁচটি মামলা রয়েছে। আহত রুমার নামে দুইটি মামলা রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে রুবির মেয়ের জামাই মনির হোসেনের সহযোগী মারুফ স্থানীয় স্কুল শিক্ষক রুহুল আমিনের একটি মোবাইল ছিনতাই করে। এ ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়া এবং আকবপুর ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল রুবিকে জিজ্ঞাসা করতে গেলে তাদের ওপর হামলা করা হয়। এতে এলাকায় চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল এবং ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়া দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। খবর পেয়ে এলাকার শতাধিক লোক ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের গণপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই রুবি, তার ছেলে রাসেল এবং মেয়ে জোনাকি নিহত হয়। আহত হয় আরেক মেয়ে রুমা আক্তার।