ফরিদপুরে জেলা যুব মহিলা লীগের সদস্য মহুয়া ইসলামের বিরুদ্ধে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে ফরিদপুরের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক হয়ে জনতার ব্যাংকের মোড় পূর্বখাবাসপুর মোড়ে পৌঁছে।
এসময় সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তাগণ ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে মহুয়াকে গ্রেফতারের দাবি জানান। অন্যথায় শুক্রবার বৃহত্তর কর্মসূচি পালন করা হবে বলে ঘোষণা দেন।
এসময় জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছাত্রনেতা খায়রুল ইসলাম রোমানের সভাপতিত্বে ও জুলাই আন্দোলনের অন্যতম ছাত্রনেতা আবরার নাদিম ইতুর সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক কাজী রিয়াজ, মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম নাহিদুল ইসলাম, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব সোহেল রানা, ছাত্রশিবিরের শহর শাখার সেক্রেটারি হাসিবুল হাসান, নগরকান্দা উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মুফতি মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা খেলাফত মজলিসের নেতা মুফতি আবু নাসির, কলেজ শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা মৌ, শিক্ষার্থী সায়মুর রহমান সিয়াম, আশিকুর রহমান, ছাত্রনেতা আর এম হৃদয় প্রমুখ।
বিক্ষোভকারীরা জানান, ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী সায়মুর রহমান সিয়াম সোমবার (৩ নভেম্বর) ফেসবুকে ‘আমার প্রাণপ্রিয় একমাত্র নেতা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)’ লিখে একটি পোস্ট করেন। ওই পোস্টে জেলা যুব মহিলা লীগের সদস্য মহুয়া ইসলাম কমেন্টে লিখেন- ‘কিন্তু সে তো এখন নাই, আর তার আদর্শও ঠিকঠাক কেউ মানে না..তাইলে তুমি কার?’
এর আগে গত ২০ অক্টোবর মহুয়া তার ফেসবুক প্রোফাইলে একটি পোস্টে লিখেন- ‘বাংলাদেশের মাদরাসাগুলো: বলাৎকারের ‘ঘাটি’, মুসলিম স্কলারদের ও সমাজের লজ্জাজনক ও নীরবতা।’
বক্তাগণ বলেন, গত জুলাই আন্দোলনের সময়েও যুব মহিলা লীগের নেত্রী মহুয়া ফ্যাসিবাদের সমর্থনে ব্যাপক তৎপরতা চালান। তিনি আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সহ নিহত শহীদদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন।
তারা অভিযোগ করেন, মহুয়া ইসলাম বিভিন্ন সময় ট্রান্সজেন্ডারের স্বপক্ষে সমকামিতারও প্রচারণা চালিয়ে গেছেন। তিনি ইসলামবিরোধী গোষ্ঠীর হয়ে কাজ করছেন।
তারা এ ঘটনায় মহুয়ার বিরুদ্ধে শান্ত শহরকে অস্থিতিশীল করে তোলার জন্য কাজ করছেন বলে অভিযোগ জানিয়ে তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বলেন। অন্যথায় এই প্রতিবাদের স্ফুলিঙ্গ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়লে তাতে পরিস্থিতির কোনো ধরনের অবনতি হলে তার জন্য তিনিই দায়ী থাকবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন।
বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে মিছিলকারীরা কোতোয়ালি থানায় যান এবং মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। এর আগে সকালে একটি প্রতিনিধি দল ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আব্দুল জলিলের সাথে সাক্ষাৎ করে মহুয়া ইসলামের বিরুদ্ধে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) কে অবমাননার বিষয়ে অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো: আব্দুল জলিল বলেন, ৯০শতাংশ মুসলিম নাগরিকদের দেশে একজন নবীকে (সা:) নিয়ে অবমাননাকর কথা বলবে আর তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা হয় নাকি? এ ব্যাপারে আমরা সংশ্লিষ্টদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে আন্দোলনকারীদের দাবি অনুযায়ী ক্ষমা চাওয়ার ব্যাপারে মহুয়া ইসলামের বক্তব্য জানতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে একবার রিং হওয়ার পরে তিনি ফোনটি কেটে দেন।



