কর্নেল মো: আব্দুল মোত্তাকিম

পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আগ পর্যন্ত বিজিবি জনগণের পাশে থাকবে

খাগড়াছড়িতে ১৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন

‘পাহাড়ি-বাঙালি পৃথক কোনো জাতি নয়, আমাদের প্রথম পরিচয় আমরা সকলেই বাংলাদেশের নাগরিক। আমরা সকলেই শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে একসাথে বসবাস করতে চাই।’

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

Location :

Khagrachari
কথা বলছেন কর্নেল মো: আব্দুল মোত্তাকিম
কথা বলছেন কর্নেল মো: আব্দুল মোত্তাকিম |ছবি : নয়া দিগন্ত

খাগড়াছড়ি বিজিবি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোঃ আব্দুল মুত্তাকিম বলেছেন, খাগড়াছড়ির পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এবং ১৪৪ ধারা না ওঠা পর্যন্ত বিজিবি নিরবিচ্ছিন্নভাবে সাধারণ জনগণের পাশে থেকে দায়িত্ব পালন করবে। সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিজিবি সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে স্বনির্ভর বাজার এলাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি আরো বলেন, বিজিবির দ্রুত পদক্ষেপের কারণে দুষ্কৃতিকারীরা এই এলাকায় নাশকতা সৃষ্টি করতে পারেনি এবং পাহাড়ি-বাঙালির সঙ্ঘাত আমরা প্রতিহত করতে সক্ষম হই। গত ২৭ সেপ্টেম্বর স্বনির্ভর বাজার ও চেঙ্গি স্কয়ারের আশপাশে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে সহিংসতা রোধে ৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়। ঘটনার প্রথম দিনেই স্বল্প সময়ের মধ্যে বিজিবি অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে শান্তিপূর্ণভাবে কোনো প্রকার হতাহতের ঘটনা ব্যতীত স্বনির্ভর এবং চেঙ্গি এলাকা আমাদের নিয়ন্ত্রণে নিই। আমাদের ১০টি প্লাটুন খাগড়াছড়ি শহর ও স্বনির্ভর বাজারে দিনে ও রাতে সার্বক্ষণিক টহল পরিচালনা করছে। এ ছাড়াও যে কোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আরো ৪টি প্লাটুন স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। অদ্যবধি স্বনির্ভর বাজার ও চেঙ্গি স্কয়ার আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

তিনি বলেন, শনিবার গুইমারাতে দুষ্কৃতিকারীদের নিক্ষেপ করা ইট-পাটকেলে বিজিবির অফিসারসহ চারজন আহত হয়েছেন। চলমান পরিস্থিতির স্থিতিশীলতা নিশ্চিতকরণে খাগড়াছড়ি শহর ও স্বনির্ভর বাজার এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অস্থায়ী চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়াও সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসার ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে নিবিড় সমন্বয়ের মাধ্যমে নিয়মিত টহল পরিচালনা করে এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সেক্টর কমান্ডার বলেন, কিছু মহল ষড়যন্ত্র করে পার্বত্য এলাকাকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এ সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় বেসামরিক প্রশাসনসহ সেনাবাহিনী যেভাবে আমাদের সহযোগিতা চাচ্ছে আমরা তা করে যাচ্ছি। পাহাড়ে আমরা অপারেশন পরিচালনা করছি। সীমান্তে আমরা কঠোর নজরদারি অব্যাহত রেখেছি, যাতে অবৈধ অস্ত্র প্রবেশ করতে না পারে। দুর্গম এলাকার সীমান্তগুলোতে আমরা টহল ব্যবস্থা জোরদার রেখেছি।

এ সময় বিজিবির এ কর্মকর্তা খাগড়াছড়ির সকল জনসাধারণকে আরো ধৈর্যশীল ও সহনশীল হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, পাহাড়ি-বাঙালি পৃথক কোনো জাতি নয়, আমাদের প্রথম পরিচয় আমরা সকলেই বাংলাদেশের নাগরিক। আমরা সকলেই শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে একসাথে বসবাস করতে চাই। আপনাদের কোনো দাবি থাকলে সকলেই একসাথে বসে আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে তা আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করবো।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ৩২ বিজিবি খাগড়াছড়ি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে: কর্নেল কামরান কবির উদ্দিন, একই ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাস্টার মো: হাসানুজ্জামান এবং সেক্টর সদর দফতরের সহকারী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাস্টার মো: ইউনুস আলী।