টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে প্রবাসী ফিরোজ আল মামুনের (৪৮) রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। একইসাথে তিন যুবকের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন এক প্রবাসীর স্ত্রী ফিরোজা খাতুন। পরকীয়ার কারণেই এই খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তরফপুর গ্রামের মাটিয়াগাড়া এলাকার মরহুম জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে ফিরোজ আল মামুন প্রায় চার মাস আগে মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরেন। আসার কিছু দিনের মধ্যেই একই গ্রামের প্রবাসী শাহ আলমের স্ত্রীর ফিরোজা খাতুনের সাথে পরকীয়ায় সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ফিরোজা খাতুন ফিরোজ ছাড়াও আরো দু’ যুবকের সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। গত সোমবার রাতে ফিরোজা বেগম ফোন করে কথিত প্রেমিক ফিরোজ আল মামুনকে বাসায় ডাকে। কথা মতো বাসায় আসে ফিরোজ। তার কিছুক্ষণ পরই ফিরোজার আরেক প্রেমিক জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়াও ফিরোজার বাড়িতে চলে আসে।
এ সময় ফিরোজ ও সোনা মিয়ার মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ফিরোজের মাথায় আঘাত করে সোনা মিয়া। এতে ঘটনাস্থলেই মামুনের মৃত্যু হয়। লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে ফিরোজা খাতুন ও সোনা মিয়া মিলে ফিরোজের লাশ বাড়ির পাশের ক্ষেতে ফেলে রাখে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে প্রবাসী ফিরোজ আল মামুনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর রাতে ফিরোজা খাতুনকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যমতে বুধবার (২৩ জুলাই) সকালে ফিরোজার কথিত প্রেমিক জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ফিরোজ আল মামুন খুনের ঘটনায় তার ভগ্নিপতি ফরহাদ মোল্লা মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর মির্জাপুর থানা পুলিশ হত্যার সাথে জড়িত ফিরোজা খাতুন ও কথিত প্রেমিক জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়াকে গ্রেফতার করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক জুয়েল রানা জানান, হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকায় ফিরোজা ও তার পরকীয়া প্রেমিক জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার কথা স্বীকার করেছে। প্রেমঘটিত কারণেই ফিরোজ আল মামুনকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের বুধবার রুমেলিয়া সিরাজুমের আদালতে উঠালে আরো জিজ্ঞাসার জন্য ফিরোজা খাতুনকে তিন দিন ও জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়াকে দু’ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন।
মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘পরকীয়ার জেরেই ফিরোজ আল মামুনকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করে ফিরোজা খাতুন ও তার পরকীয়া প্রেমিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ফিরোজা খাতুনের সাথে একই এলাকার জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়া, প্রবাসী ফিরোজ আল মামুন এবং আরো এক যুবকের পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল বলে জানতে পেরেছি। হত্যাকাণ্ডে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা তা জানতে তদন্ত চলছে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।’