ফেনী শহরের মহিপালে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি চালায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। তাদের গুলিতে মাহমুদুল হাসান মাসুমসহ ১১ জন নিহত হন। এর মধ্যে মাসুম হত্যা মামলায় ২২১ জনের নামে চার্জশিট আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আলমগীর হোসেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাবেদ আক্তারের আদালতে চার্জশিট জমা দেন। পুলিশ সুপার মো: হাবিবুর রহমান প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার জানান, চব্বিশের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৪ আগস্ট মহিপালে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা গুলি ছোঁড়ে। এতে মাসুমসহ ১১ জন প্রাণ হারান। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মাহমুদুল হাসান ১৬২ জনের নাম উল্লেখ করে ফেনী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত ও চুলচেরা বিশ্লেষণ করে ২২১ জনের নামে চার্জশিট জমা দেয়া হয়। এজাহারভুক্ত ১৬২ জনের মধ্যে ১৫৬ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। অতিরিক্ত তদন্তে যোগসাজশ পাওয়ায় আরো ৬২ জনকে চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
তিনি জানান, চার্জশিটে অভিযুক্তদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. জে. (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী রয়েছেন।
পুলিশ সুপার মো: হাবিবুর রহমান আরো জানান, এ মামলায় ৫১ জন গ্রেফতার রয়েছে। এদের মধ্যে তিন জন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বেশ কিছু অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। নিরপরাধ ব্যক্তিদের বাদ দেয়া হয়েছে। রাজনৈতিক বিবেচনায় অভিযুক্ত করার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, মহিপালে ৪ আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় ৭টি হত্যা, ১৫টি আহত মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ২ হাজার ১৯৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৪ হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। সবকটি মামলায় প্রায় ১ হাজার ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সব মামলায় ১১ জন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছে।