গাজীপুরের টঙ্গীতে পোশাক কারখানায় এক কর্মকর্তা অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দ্বিতীয় দিনেও অর্ধশতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হওয়ায় কর্তৃপক্ষ কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছে।
রোববার (৩০ নভেম্বর) মহানগরের টঙ্গীর মিলগেট এলাকার হামীম গ্রুপের (ইউনিট-৩) ক্রিয়েটিভ কালেকশন লিমিটেড (সিসিএল) কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে, শনিবার (২৯ নভেম্বর) কারখানার কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর লুৎফর রহমান কর্মক্ষেত্রে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে অসুস্থ অবস্থায় লুৎফর রহমানকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় প্রায় অর্ধশত শ্রমিক আতঙ্কিত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়।
গত দিনের মতো আজও একই আতঙ্কে অর্ধশতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। কর্তৃপক্ষ তাদের উদ্ধার করে টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালসহ আশপাশের কয়েকটি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।
কারখানার শ্রমিকরা জানান, ক্রিয়েটিভ কালেকশন লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা সকালে কাজে যোগ দেয়। হঠাৎ অর্ধশতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে শারমিন (২৫), আমেনা (২৯), জুলফা (১৯), জুলেখা (৪০), বিলকিস (৪৩), খাদিজা (২৫), জাকিয়া (২৪), ফারজানা (২৮), বুরিনা (২৬), রমিজা (২৬), সায়মা (২৫), নুর নাহার (৩০), রিনা (৩৫), আসমা (৩৫), বেলায়েত হোসেন (৩০), সবুজ (৪২), আরিফা (২৮), রেনুজা (২৩), আব্দুস সালামকে (৪০) টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
গুরুতর আহত কয়েকজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং অন্যদের কামারপাড়া ইস্ট-ওয়েস্টসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়। শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে কর্তৃপক্ষ আজকের জন্য (দ্বিতীয় দিন) কারখানা ছুটি ঘোষণা করে।
হামীম গ্রুপের মহা-ব্যবস্থাপক (জিএম) মিজানুর রহমান বলেন, ‘শনিবারের আতঙ্কের রেশ ধরে রোববার বেশ কয়েকজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ঘটনার পর আজকের জন্য কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।’
টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ইশরাত জাহান এনি জানান, ক্রিয়েটিভ কালেকশন লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা ম্যাস প্যানিক ডিজঅর্ডারের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আবার অনেক শ্রমিক শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন।
উল্লেখ্য, শনিবার (২৯ নভেম্বর) ক্রিয়েটিভ কালেকশন লিমিটেড (ইউনিট-৩) কারখানার কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর লুৎফর রহমান হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। ওই দিন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কোয়ালিটি ইন্সপেক্টরের মৃত্যুর খবর শ্রমিকদের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে সুইং বিভাগে কর্মরত অন্তত অর্ধশতাধিক শ্রমিক আতঙ্কিত হয়ে অচেতন হয়ে যান। তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।



