ডুমুরিয়ায় গণসংযোগকালে মিয়া গোলাম পরওয়ার

সংস্কার ও গুম-খুনের বিচার শেষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে

‘দেশবাসী আর ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ এর মতো কোনো নির্বাচন দেখতে চায় না। বিগত তিনটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, পুলিশলীগ মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি।’

ডুমুরিয়া (খুলনা) সংবাদদাতা

Location :

Dumuria
ডুমুরিয়ায় গণসংযোগকালে মিয়া গোলাম পরওয়ার
ডুমুরিয়ায় গণসংযোগকালে মিয়া গোলাম পরওয়ার

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘ড. ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তী সরকারের কাছে দাবি- গুম খুনের বিচার, আহতদের পুর্নবাসন এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় জনগণ মেনে নেবে না।’

সোমবার (৩০ জুন) নির্বাচনী এলাকা ডুমুরিয়া উপজেলার ৮ নম্বর শরাফপুর ইউনিয়নে মতবিনিময় সভা ও দিনব্যাপী গণসংযোগকালে তিনি একথা বলেন।

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘দেশবাসী আর ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ এর মতো কোনো নির্বাচন দেখতে চায় না। বিগত তিনটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, পুলিশলীগ মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। আর কোনোদিন তেমন নির্বাচন এদেশের মানুষ দেখতে চায় না। দেশবাসী চায় একটি পরিচ্ছন্ন, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। তা না হলে ছাত্র আন্দোলন ব্যর্থতায় পরিণত হবে। ৫ আগস্টের ঐতিহাসিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি স্বৈরাচারের বিনাশ হয়েছে। আমরা একটি দুঃসময় অতিক্রম করে একটা নতুন সুসময়ের যাত্রা শুরু করেছি। এখন আমাদের একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বিগত ১৫-১৬ বছর জামায়াত, বিএনপি নেতাকর্মী, আলেম ওলামাদের ওপর মিথ্যা মামলায় ফাঁসি জেল জুলুম অত্যাচারের ষ্টিম রোলার চালিয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে ২৪ সালের জুলাই আগস্টের ছাত্র জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে স্বৈরাচারের পতনের পর নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে এবং ড. ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তী সরকার গঠিত হয়েছে।’

জনসংযোগ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বানিয়া খালী বাজারে জনসভা, শরাফপুর বাজারে শ্রমিক সমাবেশ, বসুন্দিয়া, ভুলবাড়িয়া, গজেন্দ্রপুর সেনপড়ায় মতবিনিময় সভা, পথসভা ও জনসংযোগে করেন। এসময় কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, খুলনা জেলা অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, ডুমুরিয়া উপজেলা আমির মাওলানা মুখতার হুসাইন, নায়েবে আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান ও গাজী সাইফুল্লাহ, খুলনা জেলা বারের সিনিয়র আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের, খুলনা জজকোর্টের এডিপি অ্যাডভোকেট আবু ইউসুফ মোল্লা, বিএল কলেজের ভিপি খুলনা বারের সাবেক জয়েন্ট সেক্রেটারি শেখ জাকিরুল ইসলাম, শিবিরের কেন্দ্রীয় সহকারী স্পোর্টস সম্পাদক হাফেজ বেলাল হুসাইন, ঢাকাস্হ খুলনা ক্লাবের সভাপতির সরদার আবদুল ওয়াদুদ, ডুমুরিয়া উপজেলা সনাতন ধর্মাবলম্বী কমিটির সভাপতি বাবু কৃষ্ণ নন্দী, সেক্রেটারি অধ্যক্ষ দেবপ্রসাদ, কোষাধ্যক্ষ মাস্টার গৌতম মণ্ডল, মাওলানা হাফিজুর রহমান, মাওলানা আজাহারুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল হান্নান, শেখ মোসলেম উদ্দিন, হাফেজ মঈন উদ্দীন, মাওলানা রবিউল ইসলাম, মাওলানা গোলাম মোস্তফা মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা গোলাম রব্বানী, ক্বারী সাজ্জাদ হোসেন, হাফেজ আব্দুল হাকিম হাফেজ, আব্দুল বারীসহ বিপুল সংখ্যা নেতাকর্মী ও জনসাধারণ অংশ নেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘মানুষের রচিত আইনকানুনের কারণে যে বৈষম্য, জুলুম ও শোষণ সৃষ্টি হয়েছে এগুলো থেকে সমাজকে বের করে এনে সুন্দর স্বাচ্ছন্দ্য জীবন এবং ভারসাম্যপূর্ণ অর্থব্যবস্থা নিশ্চিত করে যাকাত। সে কারণে যাকাত ইসলামে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। বাংলাদেশে যত ধনী আছে তারা যদি যাকাত দেন তাহলে আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশে একজনও দরিদ্র থাকবে না। সবাই যাকাতদাতা হয়ে যাবে। আমাদের সমাজ যাকাতকে বর্জন গণতান্ত্রিক পুঁজিবাদী, তথাকথিত ধর্ম নিরপেক্ষ চিন্তা চেতনার ওপর গড়ে উঠার কারণে সমাজের মানুষের শোষণ বঞ্চনা দূর হচ্ছে না। যাকাত ভিত্তিক অর্থব্যবস্থা চালু না হলে এটা দূর করা সম্ভবও হবে না।’