খুলনায় পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া চরমপন্থী নেতা নাসিম তিন দিন পর গ্রেফতার

নাসিমের বিরুদ্ধে দিঘলিয়া, দৌলতপুর, সোনাডাঙ্গা, হরিণটানা ও বাগেরহাটের ফকিরহাটসহ বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে খুলনার আলোচিত গণেশ হত্যা, হুজি শহীদ, মুন্না, ইকবাল হুজুর, ফকিরহাটের জাহিদ চেয়ারম্যান হত্যা মামলাসহ চাঁদাবাজি, অপহরণ, ডাকাতি, অস্ত্র কেনাবেচাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।

খুলনা ব্যুরো

Location :

Khulna
খুলনায় পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া চরমপন্থী নেতা নাসিম তিন দিন পর গ্রেফতার
খুলনায় পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া চরমপন্থী নেতা নাসিম তিন দিন পর গ্রেফতার |নয়া দিগন্ত

পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়ার তিন দিন পরে খুলনার পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির (এমএল) আঞ্চলিক নেতা মো: নাসিমুল গণি ওরফে নাসিমকে (৫৬) গ্রেফতার করা হয়েছে।

রোববার (২২ জুন) নগরীর খালিশপুর মুজ্গুনী পার্ক এলাকার একটি চারতলা ভবন থেকে গোয়েন্দা পুলিশের সহযোগিতায় দিঘলিয়া থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ প্রায় এক ডজন মামলা রয়েছে।

গ্রেফতার নাসিমুল গণি ওরফে নাসিম দিঘলিয়া উপজেলার ফরমায়েশখানা এলাকার বাসিন্দা মরহুম আবদুল গফুরের ছেলে।

গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দিঘলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এইচ এম শাহীন।

গত ২০ জুন পুলিশের উপর হামলা এবং সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে পুলিশের দায়ের করা মামলায় নাসিম প্রধান আসামি। গণেশ হত্যা মামলায় তার ৩২ বছরের কারাদণ্ড আছে।

পুলিশ জানায়, গত বুধবার (১৮ জুন) সন্ধ্যার দিকে খুলনার দিঘলিয়া থানার একটি টিম ওসি তদন্ত ও সেকেন্ড অফিসার এসআই তারেকের নেতৃত্বে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পাটির নেতা ও একাধিক হত্যা মামলার আাসামি নাসিমকে গ্রেফতারের জন্য উপজেলার ফরমায়েশখানার ঘোলারঘাট এলাকায় গেলে নাসিমের অনুসারীরা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। সেসময় তিনজন পুলিশ সামান্য আহত হন।

এ ঘটনার পর দিঘলিয়া থানা পুলিশ ও যৌথ বাহিনী গোটা এলাকায় অভিযান শুরু করলেও নাসিমকে আটক করতে পারেনি। তবে রেজাউল ও আল মামুন নামে নাসিম বাহিনীর দুই সদস্যকে আটক করে।

এ বিষয়ে দিঘলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এইচ এম শাহীন বলেন, ‘নাসিমকে ছিনিয়ে নেয়া ও সরকারি কাজে বাধা দেয়ার ঘটনায় ১৯ জুন মামলা করা হয়। মামলায় নাছিমসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২৫/৩০ জনকে আসামি করা হয়। এছাড়া এ ঘটনায় গ্রেফতার রেজাউল ও আলামিনকে আদালতে বৃহস্পতিবার সোপর্দ করা হয়। সর্বশেষ খালিশপুর মুজগুন্নি এলাকার একটি চারতলা ভবনের নিচতলায় নাসিমের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে রোববার ভোরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।’

পুলিশ জানায়, নাসিমের বিরুদ্ধে দিঘলিয়া, দৌলতপুর, সোনাডাঙ্গা, হরিণটানা ও বাগেরহাটের ফকিরহাটসহ বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে খুলনার আলোচিত গণেশ হত্যা, হুজি শহীদ, মুন্না, ইকবাল হুজুর, ফকিরহাটের জাহিদ চেয়ারম্যান হত্যা মামলাসহ চাঁদাবাজি, অপহরণ, ডাকাতি, অস্ত্র কেনাবেচাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে একটি অস্ত্র মামলায় ১৭ বছর এবং একটি হত্যা মামলায় ৩২ বছরের কারাদণ্ডাদেশ রয়েছে। নাসিম ২০০২ সালে গণেশ হত্যা মামলায় আটক হওয়ার পর আদালত থেকে জামিন নেন। খুলনার বিএল কলেজ গেটে ২০২২ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা রিয়াজ শাহেদ হত্যা প্রচেষ্টা মামলারও আসামি সে।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, চরমপন্থী নেতা নাসিম দু’বছর আগে এলাকায় ফিরে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আব্দুস সালাম মুর্শিদী এবং শেখ পরিবারের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে।