ঢাকায় চিকিৎসার জন্য গিয়ে একই পরিবারের তিন সদস্যের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
রামগঞ্জ উপজেলার ৯ নম্বর ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা বেপারী বাড়ির সৌদি প্রবাসী মনির হোসেন (৫২), তার স্ত্রী স্বপ্না বেগম (৩৮) ও ১৮ বছরের প্রতিবন্ধী ছেলে নাঈম ঢাকার একটি হাসপাতালে এক ঘণ্টার ব্যবধানে মৃত্যুবরণ করেন।
সৌদি প্রবাসী মনির হোসেন ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা গ্রামের ঈমান আলী ব্যাপারী বাড়ির মো: মনুহার মিয়ার ছেলে। মনির হোসেন দম্পতির তিন ছেলের মধ্যে নাঈম সবার বড়। মনির হোসেন দম্পতির এক ছেলে ৮ম শ্রেণি ও ছোট ছেলে ২য় শ্রেণির শিক্ষার্থী বলে জানান বাড়ির লোকজন।
পারিবারিক সূত্রে ও মনির হোসেনের স্বজন মো: রাশেদ জানান, ছেলে নাঈমের চিকিৎসার উদ্দেশ্যে গত কয়েকদিন আগে মনির হোসেন সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে আসেন। শনিবার (২৮ জুন) সকালে মনির হোসেন তার স্ত্রী স্বপ্না বেগম ও ছেলে নাঈমকে চিকিৎসার জন্য ঢাকার মগবাজারে অবস্থিত আদ-দ্বীন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। ডাক্তারের সিরিয়াল না পেয়ে রাতে পার্শ্ববর্তী আবাসিক হোটেল ‘সুইট স্লিপ’-এ অবস্থান করেন তারা। বিকালে ওই হোটেলে নাস্তা খেয়ে রাত ১১টার দিকে একই হোটেল থেকে রাতের খাবার নিয়ে হোটেলের রুমে নিয়ে যান।
পরে আজ রোববার (২৯ জুন) সকালে তিনজনই গুরুতর অসুস্থ হয়ে গেলে মনির হোসেনের চাচা রফিক উল্যাহকে বিষয়টি জানালে তিনি ও স্বজনরা মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে আদ-দ্বীন হাসপাতালে নিয়ে গেলে বেলা ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে প্রবাসী মনির হোসেন, স্বপ্না বেগম ও সন্তান নাঈম মৃত্যুবরণ করেন।
এদিকে একসাথে বাবা-মা ও সন্তানসহ তিনজনের আকস্মিক ও রহস্যজনক মৃত্যুতে শোকের ছায়া ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে রামগঞ্জ উপজেলার গ্রামের বাড়িতে। স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে পুরো গ্রাম। এলাকাবাসীর ধারণা- খাবারে বিষক্রিয়ার কারণেই এমন ঘটনা ঘটতে পারে।
এ বিষয়ে পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেছে বলে জানান মনির হোসেনের চাচা রফিক উল্যাহ। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে কিছু বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে একইসাথে মা-বাবা ও সন্তানের মৃত্যুতে রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা গ্রামের ঈমান আলী ব্যাপারী বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। নিহতদের স্বজন, প্রতিবেশী ও এলাকার সাধারণ মানুষ এমন মর্মান্তিক ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে গেছেন।