দ্রুত সময়ের মধ্যে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ইপিজেড বাস্তবায়নের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বিকেলে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জেম হোসেনের হাতে এ স্মারকলিপি তুলে দেয়া হয়।
গোবিন্দগঞ্জের সর্বস্তরের জনগণের পক্ষে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন গোবিন্দগঞ্জ আসনের জামায়াত পদপ্রার্থী ডা: মো: আব্দুর রহিম সরকার। এ সময় জামায়াতে ইসলামী গাইবান্ধা জেলা শাখার আমির মো: আব্দুল করিম সরকার, সাংবাদিক সৈয়দ রোকনুজ্জামান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি মো: আকরাম হোসেন, আবুল হোসেন মাস্টার, অধ্যাপক আশরাফুল ইসলাম রাজু, গোলাপবাগ ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মো: ওয়াজিদুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা মো: জাহাঙ্গীর আলম, শিক্ষক মো: শেখ ফরিদ, মাওলানা মশিউর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, উত্তর অঞ্চলের গেটওয়ে নামে পরিচিত গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জে ২০১৯ সালে বেপজা গভর্নর বোর্ডের ৩৪তম সভায় রংপুর চিনিকলের সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের এক হাজার ৮৪২ একর জমিতে ১০তম ‘রংপুর প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা’ স্থাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যোগাযোগে ও মালামাল সরবরাহ এবং পরিবহনের ক্ষেত্রে এ ইপিজেড অত্যন্ত সুবিধাজনক অবস্থানে থাকায় বেপজা এ স্থান নির্বাচনের গুরুত্ব দিয়েছে। ইপিজেড বাস্তবায়ন হলে বিভিন্ন ধরনের শিল্প স্থাপন এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করার দুয়ার খুলবে।
এছাড়া উৎপাদিত পণ্য সাধারণত শতভাগ বিদেশে রপ্তানি করা হয়। এর ফলে বিশেষ করে বিভিন্ন শিল্প-কারখানা স্থাপন হলে নারীসহ ২ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। একইসাথে রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হবে।
এদিকে এ সকল সুযোগ-সুবিধা সামনে রেখে ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় জানানো হয় এক হাজার ৮৪২ একর জমির মধ্যে মাত্র ৪৫০ একর জমি বেপজার কাছে হস্তান্তর করে বাকি জমি আইন মেনে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সাঁওতাল বাঙ্গালীদের মধ্যে লিজ দেয়া হবে। একটি স্বার্থান্বেষী মহল সাঁওতালদের ব্যবহার করে ইপিজেড নির্মাণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে কয়েকটি সূত্র। তবে মোট জমির ৮০ ভাগ জমি মুসলমানদের বাকি ২০ ভাগ হিন্দু ও সাঁওতালসহ অন্যদের।
পরে প্রস্তাবিত ইপিজেডের আকার মাত্র ২৫৪ একর এবং তদসংলগ্ন ১৯৬ একর নিয়ে মোট ৪৫০ একর জমি রংপুর চিনিকল কর্তৃক বেপজার কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ ৪৫০ একর জমিতে সাঁওতালদের জমি নেই বললেই চলে। অথচ একটি দুর্বৃত্ত মহল নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য সাঁওতালদের ব্যবহার করে ইপিজেড নির্মাণে প্রতিবন্ধকতা করার চেষ্টা করছে। এদিকে প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম সম্পন্ন হলেও ইপিজেড নির্মাণ কাজ শুরু না হওয়ায় আন্দোলন করছে গোবিন্দগঞ্জের মানুষজন। তাদের দাবি, ৪৬০.৪২ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এবং প্রায় ৪ লাখ ৬১ হাজার ৪২৮ জন লোকের বসবাস এ উপজেলায় ইপিজেড নির্মিত হলে বেকার সমস্যা দূর এবং অর্থনৈতিকভাবে গোবিন্দগঞ্জসহ উত্তরবঙ্গ তথা গোটা দেশ এগিয়ে যাবে।