ফরিদপুরে মিশনারির দুই কর্মী হত্যা মামলায় চারজনের যাবজ্জীবন

মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে এ আদেশ দেন ফরিদপুরের বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো: শফিউদ্দীন।

হারুন আনসারী, ফরিদপুর

Location :

Faridpur
সংগৃহীত

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে খ্রিষ্টান মিশনারির দুই এনজিও কর্মী হত্যা মামলায় চারজনকে যাবাজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। ঘটনার প্রায় ২০ বছর পর এ রায় দেয়া হয়।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে এ আদেশ দেন ফরিদপুরের বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো: শফিউদ্দীন।

এদিকে মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ওই চার আসামি পলাতক থাকায় তাদের অনুপস্থিতিতেই এ রায় ঘোষণা করা হয়। এরপর পলাতক সাজাপ্রাপ্ত ওই চার আসামির নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বানা ইউনিয়নের শিরগ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন (৫৩), বোয়ালমারী উপজেলার গুণবাহা ইউনিয়নের গুণবাহা গ্রামের কামরুল হাসান ওরফে কামরুজ্জামান (৪৫), বোয়ালমারী চাঁদপুর ইউনিয়নের ধোপাপাড়া গ্রামের মনিরুজ্জামান ওরফে মনির (৪০) ও একই ইউনিয়নের চর ধোপাপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদ (৬০)।

জানা যায়, ২০০৫ সালের ২৮ জুলাই দিবাগত রাতে বোয়ালমারী উপজেলার চর ধোপাপাড়া গ্রামে খুন হন তপন রায় মার্ডি (৩০) ও নিকলাল মার্ডি (৩৫) নামে দুই এনজিও কর্মী। খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ওই দুই ব্যক্তি একটি মিশনারি সংস্থার মাঠকর্মী হিসেবে কাজ করতেন এবং বোয়ালমারীর চর ধোপাপাড়া গ্রামের শিরগ্রামে বিপুল কুমার বাকচীর বাড়ির ভাড়াটিয়া ছিলেন।

আদালত সূত্রে আরো জানা যায়, ২৮ জুলাই দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে ৩টার মধ্যে তাদের ঘরে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনায় ওই বাড়ির মালিক বিপুল কুমার বাকচী বাদি হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে বোয়ালমারী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বোয়ালমারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুলতান মাহমুদ ২০০৭ সালের ২৮ মার্চ ওই চার ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুরের স্পেশাল জজ আদালতের সরকার পক্ষের কৌশলী (পিপি) মো: আজিজুর রহমান বলেন, ‘এ মামলার আসামিদের গ্রেফতারের পর তাদের দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জানা যায়, টাকার লোভে তারা ওই দুই ব্যক্তিকে হত্যা করে। এরপর তারা এ মামলায় আদালত থেকে জামিন লাভ করে পলাতক হন। বিলম্বে হলেও জোড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ে সন্তুষ্ট।’