নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে ফিরেছে জেলেরা

‘নিষেধাজ্ঞে উঠে যাওয়ায় বাজারে মাছের আমদানি বাড়বে বলে আশা করছি। এতে করে ইলিশসহ সকল মাছের দাম ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে।’

খালিদ সাইফুল্লাহ

Location :

Barishal
নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে ফিরেছে জেলেরা
নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে ফিরেছে জেলেরা |নয়া দিগন্ত

সাগরে মাছ ধরার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে ১১ জুন মধ্যরাতে। ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের জেলেরা ট্রলার নিয়ে সাগর অভিমুখে যাত্রা করেছে। মৎস অধিদফতর বলছে, উপযুক্ত সময়ে প্রজনন হওয়ায় এবার কাঙ্ক্ষিত মাছ জেলেরা পাবে। এতে করে ইলিশসহ অন্যান্য মাছের দাম কমে আসবে।

মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য ২০১৫ সাল থেকে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় বিভিন্ন মেয়াদে মৎস আহরণে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছে সরকার। এতে করে দেশে মৎস সম্পদে যেমন সমৃদ্ধ হচ্ছে তেমনি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আসছে। ২০২৩ সালের ২০ পর্যন্ত সমুদ্র সীমায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছিল সরকার।

পরে দেশের মৎস্যগবেষক, জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা ভারতের সাথে সামঞ্জস্য রেখে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিন্যাসের দাবি করলে চলতি বছর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে ৫৮ দিনে নিয়ে আসে। এই দফায় ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত সমুদ্রে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা ছিল।

বরিশাল বিভাগীয় মৎস অফিস জানিয়েছে, বিভাগের ছয় জেলায় নিবন্ধিত চার লাখ ২১ হাজার ৯৩ জন জেলের মধ্যে এক লাখ ৪৬ হাজার ২৯ জন সমুদ্রগামী জেলে। এইসব জেলেরা সাধারণত সাত হাজার ৪০৫টি মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে সমুদ্রে যান।

পিরোজপুর জেলার পাড়েরহাট এলাকার আলাউদ্দিন মিস্ত্রি বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞায় অলস সময় কাটিয়েছি। সবকিছু গুছিয়ে বুধবার সাগরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছি। একদিনের মতো লাগবে সাগরে যেতে। জালে বেশি মাছ উঠলে এবার ৬/৭ দিন থাকার কথা। সে অনুসারে বাজার নিয়ে নিয়েছি।’

আরেক জেলে আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘এক ট্রিপ মাছ ধরতে সাগরে যেতে ৪/৫ লাখ টাকার খরচ হয়। বাজারে সবকিছুর দাম বেশি থাকায় খরচ বেড়েছে। আমরা নিবন্ধিত জেলে হয়েও কোন আমলে সরকারি সব সহায়তা পাই না। এবার এক ট্রিপ চাল পেয়েছি। বাকি চাল আর পাবো কিনা জানি না।’

এসব বিষয়ে বরিশাল বিভাগীয় মৎস অধিদফতরের উপ-পরিচালক আলফাজ উদ্দিন শেখ বলেন, ‘৫৮ দিনের নিষিদ্ধকালীন সময়ের মধ্যে ৪২ দিনের সরকারি সহায়তার বরাদ্দ বিতরণ করা হয়েছে। বাকি সহায়তা আরেক ধাপে দেয়া হবে। আমরা বরাদ্দের সকল চাল পাইনি এখনো। আসা মাত্র জেলেরা পেয়ে যাবেন ‘

তিনি বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞে উঠে যাওয়ায় বাজারে মাছের আমদানি বাড়বে বলে আশা করছি। এতে করে ইলিশসহ সকল মাছের দাম ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে।’