বরিশালের গৌরনদীতে এক ওয়াজ মাহফিলে রাজনৈতিক মন্তব্যকে ঘিরে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ সরোয়ার আলম বিপ্লব মাহফিলের মঞ্চে জামায়াতকে উদ্দেশ করে ভোট না দেয়ার আহ্বান জানালে উপস্থিত অসংখ্য শ্রোতা প্রতিবাদ জানিয়ে প্যান্ডেল ত্যাগ করেন। এ সময় তিনি চলে যাওয়া শ্রোতাদের উদ্দেশে বলেন, যারা প্যান্ডেল ছেড়েছেন তাদের আমি চিনি এবং নজরে রেখেছি।
শুধু তাই নয়; পরবর্তীকালে তাদের খরব আছে বলেও মন্তব্য করেন ওই নেতা, যা উপস্থিতদের মধ্যে আরো আতঙ্কের সৃষ্টি করে।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলার বাসুদেবপাড়া মারকাজুল কোরআন নূরানী ও হাফেজি মাদরাসা মাঠে আয়োজিত ১৮তম ওয়াজ মাহফিলে ঘটনাটি ঘটে।
প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রায় আধাঘণ্টা বর্তমান রাজনীতির নানা দিক তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন সৈয়দ সরোয়ার আলম বিপ্লব। একপর্যায়ে সরোয়ার বলেন, বাংলাদেশে প্রধান দুইটি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এবার ফ্যাসিস্টের কারণে আওয়ামী লীগ না থাকায় আলোচনায় এসেছে জামায়াতে ইসলামী।
এ সময় তিনি (সরোয়ার) জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে সরাসরি বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করে ভোট না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে ‘আর যাকেই ভোট দেন জামায়াতকে কেউ ভোট দেবেন না’ বলেন। সাথে সাথে মুসুল্লিদের একটি বড় অংশ প্রতিবাদ জানিয়ে প্যান্ডেল ত্যাগ করতে শুরু করেন। চলে যাওয়া মুসুল্লিদের উদ্দেশে তিনি (সরোয়ার) ‘যারা প্যান্ডেল ছেড়ে চলে গেছেন, তাদের সবাইকে চিনি। আমি নজরে রাখছি। খবর আছে’ বলেও মন্তব্য করেন।
পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হতে পারে মনে করে মুসুল্লিদের তোপের মুখে তিনি তড়িঘড়ি করে বক্তব্য সংক্ষিপ্ত করে বরিশাল-১ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে ভোট প্রার্থনা করে মঞ্চ ত্যাগ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাহফিলে অংশ নেয়া কয়েকজন শ্রোতা বলেন, ওয়াজ শুনতে এসেছি, রাজনীতি না। যখন দেখলাম নির্দিষ্ট দলকে উদ্দেশ করে নেতিবাচক কথা বলা হচ্ছে তখন আর থাকা যায়নি। এমনকি আমরা চলে আসতে গেলে আবার বললেন- চিনি, নজরে রাখছি, মাহফিলে এগুলো অত্যন্ত দুঃখজনক।
এ বিষয়ে গৌরনদী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ সরোয়ার আলম বিপ্লব বলেন, ‘আমি টানা তিন বছর তাবলিগ জামাতে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রে সফর করেছি। সেইসব কথা উল্লেখ করে যখন বক্তব্য রাখছিলাম, তখন সদ্য দুর্গা পূজার সময় জামায়াত নেতাদের বিভিন্ন মন্ডপ পরিদর্শনসহ আপত্তিকর বক্তব্য এবং ক্ষমতার লোভে ইসলামের নাম ব্যবহার করে জান্নাতের টিকিট বিক্রি করা জামায়াতকে ভোট না দেয়ার জন্য মুসলমান ভাইদের অনুরোধ করেছি। এ সময় কয়েকজন জামায়াতের কর্মীরা মাহফিলের প্যান্ডেলে হট্টগোল করতে চেয়েছিলো। পরবর্তীতে তারা প্যান্ডেল ত্যাগ করে চলে যায়।



