ভোলাহাট (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) সংবাদদাতা
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার ছয় সন্তানের জননী বৃদ্ধা বেগমের (৯০) ঠাঁই হলো নতুন ঠিকানায়। তিনি গোহালবাড়ি ইউনিয়নের বীরেশ্বরপুর গ্রামে পরিত্যক্ত একটি ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন। একজন পরিত্যক্ত মায়ের প্রতিচ্ছবি হয়ে জীবনের শেষ অধ্যায় পার করছিলেন রাস্তার পাশে ক্যানালের ধার ঘেঁষে নিঃসঙ্গ একটি নড়বড়ে খড়ের ভাঙ্গা ঘরে।
সম্প্রতি তার এই অসহায় অবস্থার খবর প্রকাশ্যে আসলে বিষয়টি নজরে আসে ভোলাহাট উপজেলা প্রশাসনের। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: মনিরুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে এবং জামায়াতে ইসলামীর সহযোগিতায় বেগমের জন্য নির্মাণ করে দেয়া হয় একটি নিরাপদ ও বসবাসযোগ্য ঘর।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মনিরুজ্জামান ফিতা কেটে বৃদ্ধাকে ঘরে তুলে দেন এবং শুকনো খাবার দেন। পরবর্তীকালে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ড. মু: মিজানুর রহমান পরিদর্শন করে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
জানা যায়, স্বামী ইদ্রিস আলীর মৃত্যুর পর থেকে ওই বৃদ্ধা একাই বাঁচার চেষ্টা করছিলেন। তার তিন ছেলে ও তিন মেয়ে আছেন। কিন্তু কেউই মায়ের পাশে নাই। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, প্রায় ৫০ বছর ধরে এই অবহেলা আর দারিদ্র্যই বেগমের একমাত্র সঙ্গী ছিল। কিছু মানুষ তাকে অন্যত্র স্থানন্তরের কথা বললেও তিনি রাজি হননি। তার ইচ্ছা এই মাটিতেই যেন মরতে পারেন। এখানেই থাকবেন।
নতুন ঘর পেয়ে আবেগাপ্লুত বেগম বলেন, আমি ভাবিনি এই বয়সে কেউ আমার কথা শুনবে। আল্লাহ যেন ওদের ভালো রাখে। যারা আমার মতো মানুষকে ঘর দিলো তাদেরকে আল্লাহ তুমি ভালো রাখিও ।
তিনি বলেন, এখন অন্তত বৃষ্টি-ঝড়ের ভয় নেই।
ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, একজন নাগরিক হিসেবে এমন অবস্থায় কেউ থাকতে পরে না। বিষয়টি জানার পরে আমি উদ্যোগ গ্রহণ করি। সমাজের সবাই যদি একটুখানি সহানুভূতি দেখায়, তাহলে আমাদের সমাজে আর কেউ অভুক্ত বা গৃহহীন থাকবে না।