খুলনায় মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান ফটকের সামনে দু’জনকে গুলি করে ও কুপিয়ে খুনের ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। তবে হত্যার পর একদিন অতিবাহিত হলেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি এবং এ ঘটনায় কোনো মামলাও হয়নি।
এর আগে গত রোববার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আদালতে হাজিরা দিতে আসা হাসিব হাওলাদার ও ফজলে রাব্বি রাজনকে প্রকাশ্যে গুলি করে ও কুপিয়ে খুন করা হয়।
খুলনা সদর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম জানান, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের মধ্যে পাঁচজনকে শনাক্ত করা গেছে। আদালত চত্বর ও এর আশপাশ এলাকায় অবস্থিত সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তাদের শনাক্ত করা হয়। তাদের অবস্থান শনাক্তে কাজ করছি। খুব শিগগির ভালো খবর দিতে পারবো।
তিনি আরো জানান, নিহতদের পরিবারের সদস্যদের মামলা করার জন্য বলা হয়েছিল। তবে তারা মামলা করতে রাজি হচ্ছে না। এজন্য পুলিশ বাদি হয়ে মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
ওসি জানান, খুনের সাথে জড়িতরা শহরের বাসিন্দা নয়। শহর লাগোয়া রূপসা নদীর ওপারে তাদের স্থায়ী আবাস। দু’জন শহরে বাড়ি ভাড়া করে থাকেন। সেখানে পরিবার থাকলেও তারা কেউ বাড়িতে অবস্থান নেন না। তারা কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন না। সকলেই ইন্টারনেটের বিভিন্ন ধরনের অ্যাপস ব্যবহার করেন। অ্যাপসগুলোতে আমাদের একসেস নেই। তাদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা তথ্যের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।
এদিকে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত ফজলে রাব্বী রাজনের পিতা এজাজ শেখ বলেন, ‘আমার একমাত্র ছেলে রাজন। সঙ্গ দোষে বখে গিয়েছিল। তাই বলে তাকে খুন করতে হবে। আমি মামলা করতে চাই না। কার বিরুদ্ধে মামলা করবো। কারা খুন করেছে পুলিশ সব জানে। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করুক।’
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, মাদক সম্রাট পলাশ বাহিনীর বেশির ভাগ সদস্য বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। বাহিনীর সদস্যদের অন্যতম ছিল ফজলে রাব্বী রাজন ও হাসিব হাওলাদার। তার বাইরে থেকে মাদক ব্যবসা, আধিপত্য বিস্তার ও পলাশবাহিনীকে সুসংগঠিত করছিল। ফলে তাদের প্রতিপক্ষ রনি চৌধুরী ওরফে গ্রেনেড বাবু গ্রুপের সদস্যরা হুমকি হিসাবে দেখছিল। এ কারণে তাদের হত্যা করে মাদক সম্রাট গ্রেনেড বাবুর সদস্যরা। কিলার গ্রুপের সদস্যরা রূপসা নদী পার হয়ে এসেছিল।
খুলনা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) একটি সূত্র জানায়, কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছিল ছয়জন। তাদের কাছে ছিল ধারালো অস্ত্র ও পিস্তল। এর বাইরে পাঁচ থেকে সাতজনের একটি টিম ছিল যারা গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করেছে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) ত ম রোকনুজ্জামান জানান, এ জোড়া খুনের পেছনে সরাসরি হাত রয়েছে খুলনার অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবুর। রাজন এবং হাসিব মূলত শহরের অন্যতম সন্ত্রাসী পলাশ গ্রপের সহযোগী ছিল।



