ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাঙ্গামাটিতে পিসিসিপির বিক্ষোভ

পাঁচ দফা দাবি

ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধ করা না হলে তিন পার্বত্য জেলার শান্তিকামী মানুষকে নিয়ে পুরো পার্বত্য চট্টগ্রামকে অচল করে দেয়া হবে হুঁশিয়ারি দেয়া হয় সমাবেশ থেকে। পরে সমাবেশ থেকে পাঁচ দফা দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।

পুলক চক্রবর্তী, রাঙ্গামাটি

Location :

Rangamati
ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাঙ্গামাটিতে পিসিসিপির বিক্ষোভ সমাবেশ
ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাঙ্গামাটিতে পিসিসিপির বিক্ষোভ সমাবেশ |নয়া দিগন্ত

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে তিন পার্বত্য জেলা নিয়ে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল করার ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) প্রস্তাবের প্রতিবাদ এবং সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে রাঙ্গামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি)।

সোমবার (১২ মে) রাঙ্গামাটি পৌরসভার সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বনরূপায় এসে বিক্ষোভকারীরা সমাবেশে মিলিত হয়।

পিসিসিপি রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সভাপতি মো: আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের (পিসিএনপি) কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান।

প্রধান বক্তা ছিলেন পিসিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল মাহমুদ, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পিসিএনপির রাঙ্গামাটি সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক। এছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমানসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি যে গভীর সংকটের মধ্যে রয়েছে, তা আর কোনো অবস্থাতেই অস্বীকার করা সম্ভব নয়। বিশেষত, আলী রীয়াজের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে ১০ মে ইউপিডিএফের আলোচনার পর পুরো পরিস্থিতি আরো উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে।’

কমিশন কি সত্যিই জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে, না সন্ত্রাসীদের রাজনৈতিক বৈধতা দিয়ে তাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ করে দেশের নিরাপত্তা ও শান্তির প্রতি চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে সে প্রশ্ন তোলেন বক্তারা।

ইউপিডিএফ পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে অনৈতিক ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে নানা অন্যায় আবদার করে তা আদায় করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন বক্তারা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, একত্রীকরণের নাম করে সন্ত্রাসীদের রাজনীতির মঞ্চে আনা, তা কখনোই গণতন্ত্রের পক্ষে উপকারী হবে না। দেশের অখণ্ডতা পার্বত্য চট্টগ্রামকে রক্ষায় ইউপিডিএফকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং ইউপিডিএফের অবৈধ অস্ত্রধারীদের আইনের আওতায় আনতে হবে বলে দাবি করেন বক্তারা।

ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধ করা না হলে তিন পার্বত্য জেলার শান্তিকামী মানুষকে নিয়ে পুরো পার্বত্য চট্টগ্রামকে অচল করে দেয়া হবে হুঁশিয়ারি দেয়া হয় সমাবেশ থেকে। পরে সমাবেশ থেকে পাঁচ দফা দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।

পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-

১. ইউপিডিএফ, জেএসএস ও কেএনএফসহ পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।

২. দেশদ্রোহী মাইকেল চাকমা, সন্তু লারমা, প্রসীত খীসা, প্রকৃত রঞ্জন চাকমা, দেবাশীষ রায়, ইয়েন ইয়েনসহ পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের সকল গডফাদারদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

৩. ঐকমত্য কমিশন থেকে ড. ইফতেখারসহ পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহযোগীদেরকে অপসারণ করতে হবে।

৪. সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ, অস্ত্র ও মাদক চোরাচালান বন্ধে নতুন করে সীমান্তরক্ষী বাহিনী- বিজিবি’র বিওপি স্থাপন করতে হবে।

৫. পাহাড়ি-বাঙালি সম্প্রীতি বজায় রাখতে ১৯০০ সালের শাসনবিধি বাতিল করে বৈষম্যহীন পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়ার উদ্যোগ নিতে হবে।