মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি শেভরন বাংলাদেশের কনডেনসেট পাইপলাইনে আগুন গেলে বাবা-ছেলে গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে উপজেলার ভূনবীর ইউনিয়নের জৈতাছড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
শেভরন বাংলাদেশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে দুর্বৃত্তরা পাইপলাইনে অবৈধভাবে ট্যাপিং করে। এতে কনডেনসেটে তেল ছড়িয়ে পড়লে রাতে আগুনের সূত্রপাত হয়। তবে এ ঘটনায় কোম্পানির গ্যাস উৎপাদনে কোনো প্রভাব পড়েনি।
শেভরনের মিডিয়া ও কমিউনিকেশনস ম্যানেজার শেখ জাহিদুর রহমান জানান, স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন তারা।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. মৌমিতা বৈদ্য জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকে আগুনে দগ্ধ রেদোয়ান (২৪) ও তার বাবা বশির মিয়াকে (৫০) প্রাথমিক চিকিৎসার পর মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রেদোয়ানের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
স্থানীয়রা জানায়, বিকেল থেকেই পাইপলাইন ছিদ্র হয়ে কনডেনসেটে তেল ছড়িয়ে পড়ছিল। রাত ৯টার দিকে হঠাৎ আগুন ধরে ভয়াবহ শিখা আকাশের দিকে উঠে যায়। এতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, শত শত মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যান। ফায়ার সার্ভিসের শ্রীমঙ্গল ও মৌলভীবাজারের চারটি ইউনিট প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
মৌলভীবাজার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের উপ-সহকারী পরিচালক আলাউদ্দিন বলেন, ‘রাত ৯টায় ইউএনও মহোদয়ের নিকট থেকে গ্যাস ফিল্ডে আগুন লাগার সংবাদ পাই। তাৎক্ষণিক শ্রীমঙ্গল স্টেশন বের হয়ে যায় এবং আমি কন্ট্রোলের মাধ্যমে মৌলভীবাজারের দু’টি ইউনিটকে সংবাদ দিয়ে নিজেই ঘটনাস্থলে রওনা করি। এখানে চারটি ইউনিট অংশ নেয়। যেহেতু প্রধান লাইন ছিল, তাই অতিরিক্ত তেলের চাপের কারণে প্রথমে আমাদের একটু বেগ পেতে হয়েছে। পরে ফোম ব্যবহারের মাধ্যমে সম্পূর্ণভাবে অগ্নিনির্বাপণ করা হয়। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।’
ঘটনার সংবাদ পেয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসলাম উদ্দিন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলামসহ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসলাম উদ্দিন বলেন, ‘তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার ফলে বড় ধরনের ক্ষতি এড়ানো গেছে। আগুনে পোড়া বাবা-ছেলেকে সু-চিকিৎসার জন্য সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেছি। তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।’